সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে বেনজির ঘটনা। এবার এক নির্বাচিত সরকার ফেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ উঠল সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) কর্মরত বিচারপতির বিরুদ্ধে। আর সেই ষড়যন্ত্রে নাকি শামিল গোটা হাই কোর্টও! শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে এই নজিরবিহীন অভিযোগটি তুলেছেন খোদ অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের মুখ্যসচিব। শুধু তাই নয়, এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে আস্ত একটা চিঠি লিখে ফেলেছেন অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস জগনমোহন রেড্ডি (Y S Jagan Mohan Reddy)।
অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের এক সিনিয়র বিচারপতি এবং রাজ্যের হাই কোর্ট যৌথভাবে তাঁর নির্বাচিত সরকার ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। ওই বিচারপতির সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ আছে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা টিডিপি (TDP) সুপ্রিমো এন চন্দ্রবাবু নাইডুর। আর নাইডুর ইশারাতেই একের পর এক সরকার বিরোধী কাজ করে চলেছেন তিনি। প্রধান বিচারপতিকে লেখা চিঠিতে অভিযুক্ত বিচারপতি এবং চন্দ্রবাবু নাইডুর এই ঘনিষ্ঠতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন জগনমোহন রেড্ডি। সেই সঙ্গে প্রশ্ন তোলা হয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ হাই কোর্টের বহু সিদ্ধান্ত নিয়ে। জগন সরকারের দাবি, অন্ধ্রপ্রদেশ হাই কোর্ট উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সরকারের একাধিক সিদ্ধান্তের বিরোধী রায় দিয়েছে। এমনকী বিচারব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের বিরুদ্ধে যে সব দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চলছে, সেগুলিও প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁর। ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টির (YSRCP) প্রধান বলছেন, অন্ধ্রপ্রদেশ হাই কোর্ট স্বাধীনভাবে কাজ করছে না। তাঁদের কার্যপদ্ধতিও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করছেন নাইডু ঘনিষ্ঠ ওই বিচারপতিই।
[আরও পড়ুন: সরকারের অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তে আদালতের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়, সুপ্রিম কোর্টকে জানাল কেন্দ্র]
বস্তুত, সম্প্রতি অন্ধ্রপ্রদেশ হাই কোর্টের বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত অন্ধ্র সরকারের বিপক্ষে গিয়েছে। সেই সঙ্গে সরকারের তিনটি রাজধানী তৈরির যে পরিকল্পনা, সেই পরিকল্পনার বিরুদ্ধেও বেশ কয়েকটি জনস্বার্থ মামলা গ্রহণ করেছে হাই কোর্ট। এগুলিই বিচারব্যবস্থার প্রতি অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রীর এই ক্ষোভের মূল কারণ। তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, অন্ধ্রের সরকার ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে যে দাবি তিনি করছেন, সেটা নেহাতই অতিরঞ্জিত। কারণ, এই মুহূর্তে অন্ধ্রপ্রদেশ বিধানসভায় সংখ্যার বিচারে অন্তত ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টির সরকার পড়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তবে, বিচারব্যবস্থার দিকে একটি রাজ্যের নির্বাচিত সরকার ফেলে দেওয়ার চেষ্টার এই অভিযোগ একেবারেই বেনজির।