সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যুদ্ধের আগুনে ছারখার ইউক্রেন (Ukraine)। যেন টাইম মেশিনের কারসাজিতে দেশটি ফিরে গিয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিনগুলিতে। প্রাক্তন সোভিয়েত দেশটির রাজধানী কিয়েভ, খারকভ, ওডেসা, মারিওপোল, চেরনিহিভের মতো শহরগুলি মৃত্যুপুরীর রূপ নিয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে ফের রাশিয়াকে আলোচনার টেবিল আসার আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তাঁর হুঁশিয়ারি, আলোচনা ব্যর্থ হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে।
[আরও পড়ুন: লন্ডনের ছাত্রীনিবাসে ভারতীয় বংশোদ্ভূত পড়ুয়া খুন, গ্রেপ্তার টিউনিশিয়ার যুবক]
সিএনএন সূত্রে খবর, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনে রাশিয়ার অনুপ্রবেশ ঠেকানো নিয়ে নিজের মত প্রকাশ করেছেন ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি জানিয়েছেন, আলোচনার মাধ্যমেই ইউক্রেনে রাশিয়ার অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে চান। তবে একই সঙ্গে তাঁর মত, সেই আলোচনা যদি ব্যর্থ হয় তা হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হতে বাধ্য। জেলেনস্কির কথায়, “তাঁর (ভ্লাদিমির পুতিন) সঙ্গে আলোচনার জন্য আমি রাজি। গত দু’বছর থেকে আমি আলোচনা চালানোর চেষ্টা করছি। আমি মনে করি আলোচনা ছাড়া এই যুদ্ধ বন্ধ করা সম্ভব নয়।” কমেডিয়ান থেকে দেশনায়ক হয়ে ওঠা ওই রাষ্ট্রনায়ক আরও বলেন, “আমার মনে হয় আলোচনা চালানোর জন্য এবং বিশেষ করে পুতিনের সঙ্গে কথা বলার জন্য সমস্ত সম্ভব চেষ্টা করা উচিত। কিন্তু এই চেষ্টা যদি ব্যর্থ হয় তাহলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে।”
এদিকে, ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বের মারিওপোল শহর আত্মসমর্পণ করবে না বলে জানিয়েছে কিয়েভ। পাশাপাশি, আলোচনা চালানোর কথা বললেও আত্মসমর্পণের প্রশ্ন নেই বলে জানিয়েছেন জেলেনস্কি। ভোলোদিমির বলেছেন, যুদ্ধ শেষ করার স্বার্থে প্রয়োজনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতেও আপত্তি নেই তাঁর। তবে ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের একটি শর্ত আছে। জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়া যদি মনে করে তাদের মদতপুষ্ট ইউক্রেনের দুই বিচ্ছিন্নতাবাদী এলাকাকে ইউক্রেনের সরকার স্বাধীন বলে ঘোষণা করবে, তবে সেই ইচ্ছে পূরণ হবে না। ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, তিনি এই সংক্রান্ত কোনও বোঝাপড়াতেই আসতে চান না।
উল্লেখ্য, সোমবার ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ২৬তম দিন। ময়দান রক্তে রাঙা হলেও পিছপা হতে রাজি নয় কোনও পক্ষই। যত দিন যাচ্ছে ইউক্রেনে আক্রমণের ঝাঁজ আরও বাড়াচ্ছে রুশ সেনা। প্রাণ বাঁচাতে বহু মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, ভিনদেশের আশ্রয়ে জুটেছে শরণার্থী (Refugee) তকমা। ছিন্নভিন্ন শৈশবও। রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্ট বলছে, ইতিমধ্যে ৫৫ হাজারের বেশি শিশু উদ্বাস্তু হয়ে গিয়েছে। রুশ সেনার গুলি, বোমায় জখম অবস্থায় নানা দেশের হাসপাাতালে ভরতি তারা। রোমে তেমনই এক হাসপাতালে গতকাল জখম ইউক্রেনীয় শিশুদের দেখতে হাজির হন পোপ ফ্রান্সিস (Pope Francis)। শিশুদের স্পর্শ করে আশীর্বাদের পাশাপাশি তাদের জন্য প্রার্থনা করলেন তিনি, আশ্বাস দিলেন অভিভাবকদের।