অভিরূপ দাস: মুসুর ডাল। ডিম আর ভাত। সঙ্গে এক পিস লেবু। বিরোধীদের কাছে রঙ্গ রসিকতার ‘ডিম্ভাত।’ কিন্তু বাস্তব হিসেব বলছে ইতিমধ্যেই শহরের প্রায় দু’কোটি মানুষ খেয়ে ফেলেছেন তা।
সরকারিভাবে চালু হয়েছিল ২০২১ সালের অক্টোবরে। ২০২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ‘মা ক্য়ান্টিনে’র ডিম-ভাত খেয়েছেন কলকাতার বিপুল সংখ্যক মানুষ খেয়েছে। পুরসভার হিসেবে তা ১ কোটি ৮৫ লক্ষ ৬৫ হাজার ৬৯০ জন। এখানেই শেষ নয়। কলকাতা পুরসভার হিসেব বলছে, প্রতি মাসে তিলোত্তমার ৯ লক্ষ ২ হাজার ৫১৮ জন মানুষ মাত্র পাঁচ টাকার বিনিময়ে এই সুষম খাবার খাচ্ছেন।
[আরও পড়ুন: কলকাতা পুরসভায় ধুন্ধুমার! মেয়রের সামনেই হাতাহাতি শাসক-বিরোধী কাউন্সিলরদের]
এহেন ডিম ভাত নিয়ে অগুনতি মিম সামাজিক মাধ্যমে। শাসক দলের সমালোচনায় মাঝে মধ্যেই ডিম-ভাত নিয়ে মশকরা করে বিরোধীরা। শুধু তাই নয় ফেসবুকে ‘ডিম্ভাত’ নামে বিরোধীদের একটি পেজও রয়েছে। একদিকে এমন মশকরা অন্যদিকে শহরের অগুনতি প্রান্তিক মানুষ ”মা ক্য়ান্টিনে’র স্টলে লাইন দিয়ে খাচ্ছেন ডিম-ভাত। যাঁরা লাইন দিয়ে ডিম-ভাত খাচ্ছেন, এ ধরণের মিমে কি তাঁদেরকেই হেয় করা হচ্ছে না? বাম সমর্থক অভিনেতা রাহুল বলছেন, ‘‘যাঁরা ডিম ভাত-কে নিয়ে মিম বানাচ্ছেন তারা জগৎটাকে অনেক উঁচু থেকে দেখেন। শহরের ধুলোবালি, রাস্তা, গলি গলতার সঙ্গে তাঁদের খুব একটা পরিচয় নেই। ডিম-ভাতটা তাই তাদের কাছে হাস্যকর। অভিনেতার সংযোজন, ‘‘যাঁরা রোদে ঝড়ে জলে লাইন দিয়ে ডিম-ভাত খাচ্ছেন তাঁরা শখ করে খাচ্ছেন না। কোথাও একটি বিশেষ দলীয় রাজনীতির সমালোচনা করতে গিয়ে দরিদ্র মানুষকে ছোট করা হচ্ছে এ ধরণের মিমে।’’
শুরুর দিনে ১৩৩ ‘মা ক্য়ান্টিন’ চালু ছিল কলকাতায়। পুরসভা সূত্রে খবর, এই মুহুর্তে শহরে ১৩৮ টি ‘মা ক্য়ান্টিন’ চালু রয়েছে। কলকাতা পুরসভা এলাকায় গোটা বিষয়টি দেখভাল করেন মেয়র পারিষদ (সমাজকল্যাণ ও নগরদারিদ্র দূরীকরণ) মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও বিস্মিত বিরোধীদের মিম নিয়ে। তাঁর কথায়, ‘‘শুধু দরিদ্র মানুষ নন। হাসপাতালের বাইরে ‘মা ক্য়ান্টিনে’ অগুনতি রোগীর আত্মীয় এই খাবার খান। ভিনরাজ্য থেকে শহরে কাজের খোঁজে এসেও অনেকের ভরসা এই ডিম-ভাত। তা নিয়ে হাসি মশকরা করা উচিত নয়।’’
[আরও পড়ুন: বেলডাঙা বিস্ফোরণে সেনার গ্রেনেড! এবার UAPA আইনে মামলা]
রাজ্য সরকার এই ডিম-ভাতের জন্য মাথাপিছু ১০ টাকা ভরতুকি দেয়। ২০২১ সালের ১৫ অক্টোবর থেকে চালু হয়েছিল এই ‘মা ক্য়ান্টিন’। শহরের চালু ১৩৮টি ‘মা ক্য়ান্টিনে’ মধ্যে ৮টি কেন্দ্র চালু আছে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে। এসএসকেএম, শম্ভুনাথ পন্ডিত, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং এম আর বাঙুর হাসপাতালে চালু আছে এই মা কিচেন।