অর্ণব আইচ ও নিরুফা খাতুন: এক হাজার কোটির আর্থিক লেনদেনের হদিশ রেশন দুর্নীতি মামলায়। লেনদেন হত দুর্নীতিতে অভিযুক্ত আনিসুর রহমান ও আলিফ নূরের মাধ্যমে। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও বাকিবুর রহমানের সঙ্গেও আর্থিক সম্পর্কের হদিশ মিলেছে ধৃত দুজনের। শনিবার আদালতে জমা দেওয়া তৃতীয় চার্জশিটে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
রেশন দুর্নীতির তদন্তে নেমে ২ আগস্ট রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ তথা বাকিবুর রহমানের আত্মীয় দুই ভাই আনিসুর ও আলিফকে গ্রেপ্তার করে ইডি। গ্রেপ্তারির আগে দেগঙ্গার ব্যবসায়ীর বাড়ি, ধান ও চালকলে অভিযান চালিয়েছিল তদন্তকারী আধিকারিকরা। সেই দুর্নীতি মামলায় আজ মেট্রো পলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে ১৫৭ পাতার তৃতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দেয় ইডি। সঙ্গে তিন হাজার পাতার নথিও জমা দেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত চার্জশিটে ইডির দাবি, রেশন দুর্নীতির এক হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে আনিসুর ও আলিফের মাধ্যমে। দুই ব্যবসায়ীর সঙ্গে অর্থের বেশকিছুটা লেনদেন হয়েছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও বাকিবুর রহমানের সঙ্গেও। দুই ভাইয়ের নাম রয়েছে চার্জশিটে। নাম রয়েছে দুই রেশন ডিস্ট্রিবিউটার ও চারটে সংস্থারও। ইডির দাবি, এই দুর্নীতির তদন্তে নেমে তাঁরা এখনও পর্যন্ত সাড়ে তিনশোরটির বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পেয়েছে। যার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার হাতবদল হয়েছে। আর এই লেনদেনর পুরো বিষয়টিই দেখতেন আলিফ ও আনিসুর। চার্জশিটে সেই তথ্যই তুলে ধরল ইডি।
দীর্ঘদিন ধরেই রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্ত চালাচ্ছে ইডি। তদন্ত হাতে পেয়েই একাধিক জায়গায় তল্লাশি করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। জেরা করা হয় একাধিক সন্দেহভাজনকে। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ বাকিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে জ্যোতিপ্রিয়কেও গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতের তালিকায় ছিলেন বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধানও। সম্প্রতি রেশন দুর্নীতি মামলায় বাকিবুর-সহ কয়েকজন জামিন পেয়েছেন। কারণ হিসেবে উঠে এসেছে, দুর্নীতির সঙ্গে তাঁদের সরাসরি কোনও যোগ মেলেনি। এমনকী দুর্নীতির অর্থ তাঁদের ব্যবসায় ব্যবহারের কোনও প্রমাণ মেলেনি।