সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে সম্ভবত এ হেন লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে আগে পড়তে হয়নি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে (CBI)। এবার তাদের হেফাজত থেকেই বেমালুম উধাও হয়ে গেল এক কুইন্টালেরও বেশি বাজেয়াপ্তো সোনা। যার বাজারমূল্য প্রায় ৪৩-৪৫ কোটি টাকা। গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে এসেছে মাদ্রাজ হাই কোর্টের (Madras High Court) নির্দেশ। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যা নিজেদের জন্য অসম্মানজনক বলে মনে করছে সিবিআই।
২০১২ সালে সুরানা কর্পোরেশন (Surana Corporation ) নামের চেন্নাইয়ের এক সংস্থা থেকে ওই সোনা বাজেয়াপ্ত করেছিল সিবিআই। সংস্থাটি বিদেশ থেকে সোনা-রুপা আমদানি করত। এদের বিরুদ্ধে ৮ বছর আগে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে প্রচুর অলঙ্কার আমদানির অভিযোগ ওঠে। সংস্থার মোট ৪০০ কেজি সোনা বাজেয়াপ্ত করে সিবিআই। যা কিনা সংস্থারই বিভিন্ন ভল্টে রাখা হয়েছিল। এই চারশো কেজি সোনা, গয়না এবং সোনার বার আকারে ছিল। সেসময় সিবিআই দাবি করে, ওই বিপুল পরিমাণ সোনা তাদের নিরাপদ হেফাজতে আছে। এবং যে ভল্টগুলিতে গয়নাগুলি রাখা হয়েছে, সেগুলির চাবি চেন্নাইয়ের সিবিআইয়ের এক বিশেষ আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। যদিও, ঠিক কবে সেই চাবি সিবিআই আদালতে জমা দেওয়া হয়, তা জানাতে পারেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
[আরও পড়ুন: বাংলায় ‘নির্মমতা’র শাসন চলছে! একুশের লক্ষ্যে অমিতাভ বচ্চনের শাশুড়ির দ্বারস্থ বিজেপি]
গত কয়েক বছরে এই বিপুল পরিমাণ সোনা নিয়ে প্রচুর মামলা-মোকদ্দমা হয়েছে। কিন্তু আদৌ তা ঠিক আছে কিনা, খতিয়ে দেখার প্রয়োজন কেউই বোধ করেনি। শেষমেশ গতবছর ডিসেম্বর মাসে ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনাল ওই সোনা সুরানা কর্পোরেশনের ঋণ শোধ করার জন্য এসবিআই-সহ ছটি ব্যাংকের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ব্যাংক আধিকারিকদের সামনে ওই সোনা খুলতে গিয়েই চক্ষু চড়কগাছ হয় সিবিআই কর্তাদের। দেখা যায়, প্রায় ১০৩ কেজি সোনা কম।
[আরও পড়ুন: ‘বিজেপি সমর্থকরাই সবচেয়ে বেশি গরুর মাংস রপ্তানি করে’, বিস্ফোরক সিদ্দারামাইয়া]
আদালতে এই ঘটনার তদন্তের দাবিতে মামলা দায়ের হয়। সিবিআইয়ের আইনজীবী সাফাই দেন, যখন ওই সোনা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, তখন তা একসঙ্গে মাপা হয়েছিল। পরে মাপা হয়েছে আলাদা আলাদাভাবে। হয়তো এই সময়ে ওই গয়নার ওজন কোনওভাবে কমে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার এই হাস্যকর যুক্তি মানেনি আদালত। বিচারপতি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সোনা গাঁজা নয়, যে উবে যাবে। মাদ্রাজ হাই কোর্ট শুক্রবার জানিয়ে দিয়েছে, ওই সোনা উধাও মামলার তদন্ত করবে সিবি-সিআইডি। সিবিআই অবশ্য, সিআইডি (CID) তদন্তকে অসম্মানজনক আখ্যা দিয়ে সিবিআই বা অন্য কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্ত দাবি করেছিল। কিন্তু, সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছে আদালত।