অভিরূপ দাস: যে বয়স রান্নাবাটি খেলার। সেই বয়সে মা হল নাবালিকা। অভিযোগের তির দিল্লির এক ব্যবসায়ীর দিকে। শুক্রবার লেডি ডাফরিন ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে মাত্র বারো বছর বয়সে পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছে যে, এই নভেম্বরে সবে বারো ছুঁয়েছে তার বয়স। পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, দিল্লির এক ব্যবসায়ী টানা যৌন নির্যাতন চালিয়েছে নাবালিকার উপর। ঘটনায় ইতিমধ্যেই মুচিপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। হাসপাতালের সুপার ডা. জয়াব্রতী মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন মেয়েটির বয়স আঠেরো হয়নি। তার উপর সিঙ্গল মাদার। আইন মেনেই আমরা পুলিশ অভিযোগ দায়ের করেছি। মেয়েটির পরিবারকে বিচার পাইয়ে দিতেই হবে।
কর্মসূত্রে পরিবারের সঙ্গে দিল্লিতে থাকতো মেয়েটি। মা লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন। বাবা কাজ করতেন গ্রিলের কারখানায়। সারাদিন মেয়েটি বাড়িতে একাই থাকত। নাবালিকার দিদিমার অভিযোগ, সে সময় পাশের বাড়ির মহেশ স্যামুয়েল নামে একজন যৌন নির্যাতন চালায় নাতনির উপর। অভিযোগ, প্রায়ই মেয়েটিকে ভয় দেখানো হতো, কাউকে কিছু বললে পরিণাম ভয়াবহ হবে। আতঙ্কে চুপ করেছিল নাবালিকা।
[আরও পড়ুন: ‘কয়লা পাচারে ১ হাজার কোটি টাকা গিয়েছে প্রভাবশালীর অ্যাকাউন্টে’, বিস্ফোরক শুভেন্দু]
সম্প্রতি দিল্লি থেকে কলকাতায় দিদিমার বাড়িতে বেড়াতে আসে সে। সেখানেই শুরু হয় পেট ব্যাথা। প্রথমটায় বাড়ির লোক ভেবেছিল, পেটের অসুখ। কিন্তু পেট খারাপের ওষুধ কাজ করেনি। শেষমেশ আল্ট্রোসোনোগ্রাফিতে দেখা যায় অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে বারো বছরের নাবালিকা। এই বয়সে প্রেগন্যান্ট! আকাশ ভেঙে পড়ে পরিবারের উপর। দিদিমার কথায়, ‘‘আমরা ওর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলি। অনেক অনুরোধ উপরোধের পর ও আমাদের জানায় পাশের বাড়ির ওই লোকটাই এর জন্য দায়ী।’’ মাত্র বারো বছর বয়সে অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু এত পরে জানা যায় তখন আইনি ভাবে অ্যাবশর্নেরও সময় পেড়িয়ে গিয়েছে। স্থির হয় বাচ্চাটিকে জন্ম দেওয়া হবে।
দক্ষ স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রাজেশ বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে জন্ম নেয় ফুটফুটে শিশু পুত্র। অস্ত্রেপচারে তাঁকে সহায়তা করেছেন ডা. সানসাং লামা, ডা. পিয়ালি দাস। চিকিৎসক জানিয়েছেন, ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী ২০ সপ্তাহ পরে আর গর্ভপাত করানো যায় না। বাড়ির লোক যখন জানতে পারে তখন সময় পেড়িয়ে গিয়েছিল। বাচ্চাটি প্রিম্যাচিওর। জন্মের সময় তার ওজন ছিল দেড় কেজি। ঘরে নতুন সদস্য এসছে। তবে আনন্দের থেকে ক্ষোভে ফুঁসছে নাবালিকার পরিবার। তাদের দাবি, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক অভিযুক্তের।