সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যতদিন যাচ্ছে ততই অবস্থার অবনতি হচ্ছে অসমের৷ বন্যার জলে ভাসছে চতুর্দিক৷ এখনও পর্যন্ত প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৷ জলের গ্রাসে বাড়ি, চাষের জমি৷ তবে অনেকেই বলছেন, ঐশ্বরিক শক্তির কাছে নাকি হার মেনেছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়৷ কারণ জল থইথই পরিস্থিতিতেও শেষনাগের উপর শায়িত বিষ্ণুর মূর্তি রয়েছে অক্ষত৷ জলস্তর বাড়লেও ক্ষতি হয়নি দেবতার৷
[ আরও পড়ুন: গল্পে নয়া টুইস্ট, বিজেপি বিধায়কের মেয়ের বিয়েই হয়নি বলে দাবি মন্দিরের পুরোহিতের]
বন্যায় প্রবল ক্ষতিগ্রস্ত অসমের ২৫টি জেলা৷ তার মধ্যেই রয়েছে কালীপুরও৷ ওই এলাকাতেই রয়েছে চক্রেশ্বর মন্দির৷ সেখানেই ভগবান শ্রীবিষ্ণুর শেষনাগের উপর শায়িত মূর্তি রয়েছে৷ বন্যায় জলের তলায় চলে গিয়েছে কালীপুরের একাধিক অংশ৷ চক্রেশ্বর মন্দিরও জলমগ্ন৷ তবে জলস্তর এখনও ছুঁতে পারেনি শেষনাগে শায়িত বিষ্ণুকে৷ সম্প্রতি এমনই এক ছবি নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে৷ অনেকেই বলছেন, এই ঘটনাই নাকি চোখে আঙুল দিয়ে প্রমাণ করে দেয় ঐশ্বরিক ক্ষমতার কাছে প্রবল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ও হার মানে৷ কেউ কেউ আবার উত্তরাখণ্ডের মেঘভাঙা বৃষ্টির ঘটনাকে টেনে এনেছেন৷ সেখানেও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে তছনছ হয়ে যাওয়া উত্তরাখণ্ডে দিব্যি অক্ষত অবস্থায় ছিল শিবের মূর্তি৷ তবে আধুনিক চিন্তামনস্ক অনেকেই এই ঘটনার সঙ্গে স্থানীয়দের বিশ্বাসের কোনও যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছেন না৷ তাঁদের দাবি, প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঐশ্বরিক ক্ষমতার কাছে লঘু, একথার কোনও সত্যতা নেই৷ ওই মূর্তি হয় তো জলস্তরের তুলনায় কিছুটা উঁচু জায়গায় রাখা বলেই এখনও অক্ষত রয়েছে৷
তবে অসমের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে যথেষ্টই উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল৷ ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি৷ জলমগ্ন এলাকার বাসিন্দার সংখ্যা ১৪ লক্ষের গণ্ডিও ছাড়িয়ে গিয়েছে৷ সেনা, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর তৎপরতায় দুর্গতদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে৷ খোলা হয়েছে ৬২টি ত্রাণশিবির৷ ফেরি পরিষেবা আপাতত পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷ সড়ক এবং ট্রেন পরিষেবাও বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন প্রশাসনিক কর্তারা৷
[ আরও পড়ুন: দুই ‘রকেট মহিলা’র কেরামতিতেই আজ উড়বে চন্দ্রযান, প্রহর গুনছে গোটা দেশ]
কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের পরিস্থিতিও প্রায় একইরকম৷ ব্রহ্মপুত্র ও আশপাশের নদীতে জল বাড়ার ফলে কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের ৮০ শতাংশ এলাকাই জলমগ্ন। ফিল্ড ডিরেক্টর পি শিবকুমার জানান, ধানসিরি নদীর জলও কাজিরাঙায় ঢুকছে। ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়ক পার করে অন্য দিকের পাহাড়ে যাচ্ছে হাতি, গন্ডার, হরিণ, বাঘ ও অন্য প্রাণী। সে কারণে জাতীয় সড়কে গাড়ির গতিবেগ ৪০ কিলোমিটার বেঁধে দেওয়া হয়েছে। চোরাশিকার রুখতে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। নৌকায় টহল দিচ্ছেন বনরক্ষীরা। প্রাণীদের আশ্রয় দিতে গত কয়েক বছরে জাতীয় উদ্যানের ভিতরে ২০০টি উঁচু এলাকা তৈরি করা হয়েছে। আশপাশের গ্রামে আশ্রয় নেওয়া হরিণ ও অন্য প্রাণীদের উদ্ধার করতে গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে৷
The post অসমে ভয়াবহ বন্যাতেও অক্ষত বিষ্ণুমূর্তি, ঐশ্বরিক ক্ষমতার কাছে হার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের! appeared first on Sangbad Pratidin.