সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিনা (China) প্রতারকদের বড়সড় চক্র ধরা পড়ল হায়দরাবাদে। জানা গিয়েছে, এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে অন্তত ৭০০ কোটি টাকার দুর্নীতির শিকার হয়েছেন ১৫ হাজার ভারতীয়। শুধু তাই নয়, দুর্নীতি করে প্রাপ্ত টাকা ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে পাঠানো হয়েছিল লেবাননের (Lebanon) সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী হেজবল্লার কাছেও। গোটা দুর্নীতি চক্রের নেপথ্যে ছিল চিনা দুষ্কৃতীরা, এমনটাই জানা গিয়েছে। কেন্দ্র সরকার ও তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছে হায়দরাবাদ পুলিশ।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে হায়দরাবাদ (Hyderabad) পুলিশের কাছে একটি আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগ জমা পড়ে। সেখানে অভিযোগকারী দাবি করেন, তাঁর ২৮ লক্ষ টাকা খোয়া গিয়েছে। তদন্তে নেমে হায়দরাবাদ পুলিশ জানতে পারে, অনলাইনে কাজ দেওয়ার নাম করে বিশাল দুর্নীতি চলছে দেশজুড়ে। প্রাথমিকভাবে ৫৮৪ কোটি টাকার দুর্নীতি ধরা পড়ে। তদন্ত এগনোর সঙ্গে সঙ্গে এই অঙ্কটা বেড়ে দাঁড়ায় ৭১২ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে ১১৩টি ভারতীয় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়েছিল এই দুর্নীতিতে।
[আরও পড়ুন: ‘বিনা বিচারে আটকে আছি, বন্দিমুক্তি কমিটি কোথায়?’, সুজাত ভদ্রকে সরাসরি প্রশ্ন পার্থর]
ঠিক কীভাবে টাকা হাতাত দুষ্কৃতীরা? হায়দরাবাদ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে অনলাইনে সহজ কাজের টোপ দিয়ে কিছু টাকা বিনিয়োগ করতে বলা হত। সেই কাজ শেষ হলে আরও বেশি টাকা বিনিয়োগ করতে পরামর্শ দেওয়া হত এবং তার পরিবর্তে নতুন কোনও কাজের বরাত থাকত। বিনিয়োগের অঙ্কের প্রায় দ্বিগুণ টাকা রোজগারের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল। এইভাবে বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ করতে থাকলেও সেই টাকা হাতে পাননি বিনিয়োগকারীরা। তাঁদের বলা হত, কাজ শেষ করতে না পারলে টাকা পাবেন না।
এই চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে গড়ে ৬ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন ১৫ হাজার ভারতীয়, এমনটাই জানিয়েছে হায়দরাবাদ পুলিশ। তদন্তে জানা গিয়েছে, ভারতীয়দের ব্যবহার করেই আর্থিক প্রতারণার জাল পেতেছিল তিন চিনা ব্যক্তি। ভারত থেকে সংগৃহীত অর্থ দুবাই (Dubai) হয়ে সোজা চলে যেত চিনে। কিছুটা অংশ লেবাননের জঙ্গি গোষ্ঠীর হাতেও যেত বলে জানা গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে চিনাদের কাউকেই এখনও ধরা যায়নি।