নব্যেন্দু হাজরা: দুই বা আড়াই হাজার নয়! শহর থেকে বসে যাবে ১৫৮টি বেসরকারি বাস। আগস্ট মাস থেকে তা শুরু হবে। কিন্তু রাস্তা থেকে বেসরকারি বাস এক ধাক্কায় অনেকটা কমে যাবে বলে যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে তা ভিত্তিহীন বলেই জানালেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। পরিবহণ দপ্তরের হিসাবে অনুযায়ী চলতি বছরে ১৫৮, আগামী বছর ১৪৭ এবং ২০২৬ সালে ৩৭টি বেসরকারি বাস বৃহত্তর কলকাতায় চলতে পারবে না।
জানা গিয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ৫০২টি বাস রেজিস্টার্ড হয়েছে। যার বেশ কিছু বসেও গিয়েছে। উলটোদিকে গত ৫ বছরে কলকাতা এবং শহরতলিতে নতুন প্রায় হাজার দেড়েক বেসরকারি বাস নেমেছে বলেই খবর। তার মধ্যে আলিপুর আরটিওতে ৪৫২টি, বারাসত ৪৪২, বারাসত ২১, বারুইপুর ২টি, বেহালা ৫, হাওড়া, ১০২, হুগলিতে ৪২, কসবা ১৭৪টি, বেলতলায় ৫৪, শ্রীরামপুর ২৪, উলুবেড়িয়া ১৪, কল্যাণীতে ১৬, সল্টলেকে ২৭টি। অর্থাৎ শেষ ৫ বছরে ১৩৬৫টি বাস নেমেছে কেএমএ এলাকায়।
পরিবহণ দপ্তরের কর্তারা তাই জানাচ্ছেন, আগস্ট মাসে রাস্তা থেকে হাজার-হাজার বাস বসে যাবে বলে যে বলা হচ্ছে, সেই তথ্য সঠিক নয়। স্নেহাশিস বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ মেনেই পনেরো বছরের পুরনো কিছু বাস বসে যাবে। তবে তাতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। পর্যাপ্ত বাস রাস্তায় রয়েছে। প্রচুর রুটে নতুন বাস নেমেছে।’’পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তর ২০০৯ সালে করা একটি মামলার ভিত্তিতে কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দেয় যে, ১৫ বছরের বয়সসীমা পেরিয়ে গেলে আর কোনও বাস কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)-র এলাকায় চালানো যাবে না। শহর কলকাতার পরিবেশ রক্ষার জন্য এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আগামী ১ আগস্ট থেকে সেই নির্দেশ কার্যকর করবে পরিবহণ দপ্তর।
তবে তার আগে বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত বাসমালিকরা। বিভিন্ন সংগঠন তাদের দাবি-দাওয়া জানিয়ে সরকারকে চিঠি দিয়েছে। তাদের মূল দাবি, করোনাকালে যে দুবছর বাস সেভাবে চলেনি, এই বাসের বয়সসীমার ক্ষেত্রে সেই দুবছর বাড়ানো হোক। এ বিষয়ে মঙ্গলবার হাজরা মোড়ে প্রতীকী বিক্ষোভ দেখায় জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট, বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট-সহ ৫টি বাসমালিক সংগঠন।
ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বোস বলেন, ‘‘আমরা চাই কোভিডের সময়ে যে দুবছর গাড়ি চলেনি, সরকার সেই দুবছর বাড়তি সময় দিক এই পনেরো বছরের গাড়ির বিষয়ে। এ বিষয়ে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’’ বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নিয়মিতভাবে গাড়ি অফরুট হচ্ছে। শুধু এক বছরের হিসাব ধরলে হবে না। সংখ্যাধিক্যের বিচারে প্রতি মাসে যত গাড়ি বাতিল হচ্ছে এই কয়েকমাসের মধ্যে তার তুলনায় কিছুটা বেশি হবে। তবে তা কখনওই দু-আড়াই হাজার নয়।’’