অর্ণব আইচ: সারাদিনের সঙ্গী মোবাইল। দিনভর মোবাইল নিয়েই ব্যস্ত থাকত ১৭ বছরের কিশোরী। আর তার জন্য বাবা-মা বকুনি দিতেই জীবনের চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল বেহালার পর্ণশ্রী এলাকার এই ছাত্রী। ফাঁকা ঘর থেকে উদ্ধার হল কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ।
অতিমারীর (Corona Pandemic) জেরে লকডাউনে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল স্কুল। অনলাইনেই চলছিল ক্লাস। আর তাতেই পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়েছে। ব্যতিক্রমী ছিল না ১৭ বছরের কিশোরীও। দিনরাত মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই বকাঝকা করেছিলেন মা-বাবা। কিন্তু সেই অভিমানে যে মেয়ে এতবড় সিদ্ধান্ত নেবে, তা কল্পনাও করেনি পরিবার। মা গঙ্গা পাইক জানাচ্ছেন, গভীর রাত পর্যন্ত মোবাইল ফোন নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করত তাঁর মেয়ে। এই নিয়ে বেশ কয়েকবার বকাবকি করা হয় তাকে। বৃহস্পতিবার বাবার সঙ্গে কথা কাটাকাটিও হয়। এরপরই শুক্রবার বাড়ি ফাঁকা থাকার সুযোগ নিয়ে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয় কিশোরী। তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানান, কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘আপাতত বিদায়, পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি’, তথাগত রায়ের টুইটে তুঙ্গে দল ছাড়ার জল্পনা]
কর্মক্ষেত্র থেকে ফিরে একটি ঘরে মেয়েকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় পরিবার। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, শুক্রবার কিশোরীর বাড়ি থেকে চিৎকার, কান্নার শব্দ ভেসে আসতে শোনেন তাঁরা। তখনই ছুটে আসেন তাঁরা। কিশোরীকে উদ্ধার করে নিয়ে যান হাসপাতালে। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। বছর খানেক বাদেই তার দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় বসার কথা ছিল। কিন্তু মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ার দরুণ পড়াশোনাতেও অমনোযোগী হয়ে পড়ছিল সে। তার জন্য দুশ্চিন্তায় ছিল পরিবার। কিশোরীকে বোঝানোর চেষ্টা করতেন প্রতিবেশীরাও। কিন্তু আখেরে লাভ হয়নি।
ঘটনায় গোটা পরিবারে শোকের ছায়া নেমেছে। কিশোরীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পর্ণশ্রী থানার পুলিশ। যদিও ঘটনাস্থল থেকে কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি।