প্রথম দিনের শেষে ভারতের স্কোর: ৩০২/৪
কোহলি: অপরাজিত ১৪৩, অশ্বিন: অপরাজিত ২২, ধাওয়ান: ৮৪, বিশু: ৩/১০৮
দেবাশিস সেন, অ্যান্টিগা: ওয়েস্ট ইন্ডিজ৷ নাম শুনলেই মনে আসে হাড় হিম করা একঝাঁক ফাস্ট বোলারের নাম৷ হোল্ডিং, মার্শাল থেকে শুরু করে ওয়ালশ, অ্যামব্রোজ৷ যুগে যুগে বিশ্বের তাবড় তাবড় ব্যাটসম্যানদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান পেস ব্যাটারি৷ কিন্তু সেই রামও নেই৷ রাজত্বও নেই৷ তাও সিরিজের প্রথম টেস্ট নিয়ে ছিল অন্য এক সংশয়৷ গতবছর ডিসেম্বরে ঘরের মাঠে শেষ টেস্ট খেলেছিলেন কোহলিরা৷ সাত মাস ৫০ ও ২০ ওভারের ম্যাচ খেলে কিভাবে ও কত তাড়াতাড়ি তাঁরা পাঁচদিনের ম্যাচে মানিয়ে নিতে পারেন, সেটাই ছিল দেখার৷
ভিন্ন পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়ার এই আলোচনা যে ভারতীয় ড্রেসিংরুমে বহুবার হয়েছে, এদিন তার প্রমাণ পাওয়া গেল মুরলি বিজয়, চেতেশ্বর পুজারাদের ব্যাটিং দেখেই৷ জেসন হোল্ডার তাঁর অনভিজ্ঞ দল নিয়ে বেশ চিন্তায় ছিলেন৷ তবে টস জিতে বিরাট আগে ব্যাট নেওয়ার পর ভারতীয়দের দেখে একবারও মনে হয়নি তাঁরা ক্যারিবিয়ানদের মাথায় চেপে বসতে পেরেছেন৷ দিনের প্রথম ওভারে গ্যাব্রিয়েলের একটিও বল ব্যাটে লাগাতে পারলেন না বিজয়৷ উল্টে দু’বার পরাস্ত হলেন৷ মাত্র ৭ রান করে সেই গ্যাব্রিয়েলের বাউন্সারে খোঁচা দিয়েই ফিরলেন বিজয়৷ দলের রান তখন মাত্র ১৪৷ পুজারা যেন ক্রিজে নামলেন ‘টেস্ট ম্যাচ’-এর ভূত মাথায় নিয়ে৷ ক্রিজে নেমে ঘুমিয়েই পড়লেন৷ লাঞ্চে যাওয়ার আগে ৬৩ বলে মাত্র ১৪৷ সেটা তাও মানা যায়৷ কিন্তু ফিরে যা করলেন, তা দেখে তাঁকে শিক্ষানবিশ মনে হতে পারে৷ ৩ বলে আরও ২ রান করলেন৷ পরের বলটা অবিবেচকের মতো শট নির্বাচন করে ফিরলেন ড্রেসিংরুমে৷
পুজারার ফেরা যেন শাপে বর হল৷ ক্রিজে এলেন কোহলি৷ পাঁচ বছর আগে যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলতে এসেসিলেন, মাত্র ১০টা ডেলিভারি খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন প্রথম ইনিংসে৷ ক্যারাবিয়ান মাটিতে ডেবিউ টেস্টে ৫ ইনিংসে গড় ছিল মাত্র ১৫.২০৷ কিন্তু এবার এক অন্য কোহলিকে দেখা গেল মাঠে৷ ভারত অধিনায়ক ১৯৭ বল খেলে করলেন অপরাজিত ১৪৩ রান৷ তাঁর বড় রানে ভর করে অ্যান্টিগা টেস্টে বড় ইনিংসের ভিত গড়ল ভারত৷ দিনের শেষে ভারতের স্কোর ৩০২/৪৷ এটাই তো টেস্ট৷ পাঁচদিনের খেলা মানে কখনওই সব বল ছেড়ে দেওয়া নয়৷ ভাল বল ছাড়ার পাশাপাশি বাজে বলকে আক্রমণ তো করতেই হবে৷ টেস্ট জিততে হলে বড় রান করার পাশাপাশি বোলারদের ২০টা উইকেট নেওয়ার সময় দিতে হয়৷ যা পুজারারা করতে পারেননি৷ করলেন কোহলি৷ সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পাশাপাশি করলেন তিন হাজার রান৷
সিরিজ শুরুর আগে শিখর না রাহুল কাকে খেলানো উচিত সেই নিয়ে প্রশ্ন ছিল৷ শেষ সিরিজের কথা মাথায় রেখে সুযোগ পেলেন শিখরই৷ হতাশ করলেন না৷ কিন্তু উইকেটটা গিফট দিয়ে এলেন৷ যেভাবে খেলছিলেন, সেঞ্চুরি নিশ্চিত ছিল৷ কিন্তু এদিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের লেগস্পিনার বিশুকে আক্রমণ করতে গিয়ে বারবার সুইপ করছিলেন৷ আউট হলেনও সেই কারণেই৷ রাহানে করলেন ২২৷
লেখার শেষে এসে বলতেই হয়, যে স্টেডিয়ামে খেলা হচ্ছে, তার নাম স্যর ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়াম৷ গ্যালারির একটি স্ট্যান্ড অ্যামব্রোজের নামে৷ কিন্তু এই দলে নেই তেমন কোনও নাম৷ এদের ভারত হারাতে না পারলে, সেটাই হবে অঘটন৷
(ছবি: প্রতিবেদক)
The post কোহলি অপরাজিত ১৪৩, বড় ইনিংসের ভিত গড়ল ভারত appeared first on Sangbad Pratidin.