চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: দলের নতুন দায়িত্ব পেয়েই শুভেন্দু গড়ে সক্রিয় কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তাঁর দায়িত্ব পাওয়ার দিনই তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন নন্দীগ্রামের দুই আদি বিজেপি নেতা। যদিও দু’পক্ষেরই দাবি, এটা নেহাতই সৌজন্য সাক্ষাৎ। কিন্তু সে কথা মানতে নারাজ রাজনৈতিক মহল। তাৎপর্যপূর্ণভাবে মঙ্গলবারই বিজেপি ছেড়েছেন ওই দুই নেতা। সাংবাদিক বৈঠক করে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধে। তারপরই কুণাল ঘোষের সঙ্গে ‘চায়ে পে চর্চা’য় যোগ দেন তাঁরা।
বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য ছিলেন জয়দেব দাস। আবার বটকৃষ্ণ দাস ছিলেন যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্য। কিন্তু দলে তৃণমূলত্যাগী (TMC) নেতাদের আধিপত্য মানতে পারেননি তাঁরা। প্রতিবাদে পদ ছেড়েছিলেন আগেই। সাংবাদিক বৈঠক করে শুভেন্দু অধিকারী-সহ নব্য বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন। তাতেও কাজ হয়নি। তাই প্রতিবাদে এবার বিজেপির (BJP) প্রাথমিক সদস্যপদ ছাড়লেন তাঁরা। এরপরই হলদিয়ার নিমতৌড়ির স্মৃতিসৌধ ভবনে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, তৃণমূল নেতা সৌমেন মহাপাত্রর সঙ্গে চা চক্রে যোগ দেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: অ-মুসলিমদের নাগরিকত্ব প্রসঙ্গ: দ্বিধাবিভক্ত মতুয়ারা, ঐক্য ভুলে ঠাকুরবাড়ির অন্দরেও তরজা]
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা কুণাল ঘোষকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, “দুজনই এলাকার দক্ষ সংগঠক। আদি বিজেপি নেতা। বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের মতভেদ থাকতেই পারে। কিন্তু সংগঠকদের এলাকায় একটা আলাদা প্রভাব থাকে। শুনলাম, ওঁরা দলীয় পদ ছেড়েছেন। জেলাতেই ছিলাম। সৌমেনদা (মহাপাত্র) বলল, তাই দেখা করতে চলে এলাম।” তিনি আরও বলেন, “এঁরা না থাকলে এলাকায় শুভেন্দু ঢুকতেই পারত না। ওঁদের কষ্টটা বুঝি। যারা অত্যাচার করেছে, তারাই এখন মাথায় বসে। অত্যাচার করেছে তারা আর বদনাম হয়েছে তৃণমূলের।” তাহলে কি দুই বিজেপিত্যাগী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে লড়তে তৃণমূলে যোগ দেবেন? জবাবে তৃণমূলের মুখপাত্র জানান, এ বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আলোচনা হবে। যা সিদ্ধান্ত হবে তা ৪ তারিখ নন্দীগ্রামের সভা থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে। রাজনৈতিক মহল একপ্রকার নিশ্চিত যে দুই নেতাই তৃণমূলে যোগ দেবেন।
[আরও পড়ুন: ডিসেম্বরের শুরুতে শুভেন্দুর গড়ে অভিষেক, কাঁথি থেকে বেঁধে দেবেন পঞ্চায়েতে লড়াইয়ের সুর]
জয়দেব ও বটকৃষ্ণ জানান, “আজ বিজেপির প্রাথমিক সদস্যপদ ছাড়লাম। দেখলাম কুণালদা এখানে আছেন। তাই দেখা করতে এলাম। এটা সৌজন্য সাক্ষাৎ।” তবে কুণাল ঘোষ বলছেন, “অতীতে এরকম সৌজন্য় সাক্ষাতের কথা অনেকে আমাদের শুনিয়েছেন। এবার আমরা শোনাব। তবে বলে রাখছি, এটা স্রেফ ট্রেলার। পুরি পিকচার আভি বাকি হ্যায়।” অর্থাৎ দায়িত্ব পেয়ে শুভেন্দুর গড়ে যে তিনি কাঁপুনি ধরাবেন তার ইঙ্গিত আগেভাগেই দিয়ে রাখলেন পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ কুণাল ঘোষ।