অর্ণব আইচ: মুম্বই হামলার ধাঁচে এবার একে ৪৭ নিয়ে আক্রমণের ছক আল কায়েদার ছায়া সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টিমের। সেই কারণেই প্রায় ২৫টি একে ৪৭-এর মতো মারাত্মক অস্ত্র জোগাড় করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল এবিটি জঙ্গি সংগঠনের বাংলাদেশি নেতা শাদ রাদি। অসমের এক কুখ্যাত অস্ত্র পাচারকারীকে সে রীতিমতো বরাত দিয়েছিল, এমনই দাবি গোয়েন্দাদের। বড়মাপের হামলার ছক কষার জন্য শাদ পাকিস্তানে গিয়ে তার ‘হ্যান্ডলার’-এর সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা করে।
সম্প্রতি রাজ্য পুলিশের এসটিএফের সহযোগিতায় অসম পুলিশ হরিহরপাড়ার নিশ্চিন্তপুরের বাসিন্দা এবিটির জঙ্গি আব্বাস আলি এবং রুকুনপুরের মিনারুল শেখকে গ্রেপ্তার করে। এ ছাড়াও বাংলাদেশের এবিটি নেতা শাদ রাদি-সহ আরও ৬ জনকে কেরল ও অসম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জেরা করে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন অসমের গোয়েন্দাদের। জানা গিয়েছে, লস্কর ই তইবা যেমন পাকিস্তান থেকে জঙ্গিদের মুম্বইয়ে পাঠিয়ে একে ৪৭ নিয়ে হামলা চালিয়েছিল, সেই আদলেই এই দেশে ফের আক্রমণের ছক কষেছে এবিটি জঙ্গিরা। তাঁদের এই সন্ত্রাসী কার্যকলাপে মদত জোগাচ্ছে পাক চর সংস্থা আইএসআই।
শুধু তাই নয়, জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা সাজাতে পাক হ্যান্ডলারের সঙ্গে ভিডিও কলে বৈঠকও করে শাদ। আলোচনা হয় বাংলাদেশে এবিটির ‘আমির’ জসিমুদ্দিনের সঙ্গেও। অস্ত্র ও বিস্ফোরক তৈরির প্রশিক্ষণের জন্য যে যুবকদের এবিটি বেছে নিয়েছে, তাদের পাক অধিকৃত কাশ্মীরে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানোর ছক কষা হয়। যাদের দিয়ে হামলার ছক কষা হয়, তাদের মধ্যে রয়েছে কয়েকজন রোহিঙ্গা যুবকও। ইতিমধ্যেই গোয়েন্দাদের হাতে এসে পৌঁছেছে অ্যাপের মাধ্যমে শাদের সঙ্গে তার পাকিস্তানের হ্যান্ডলারের কথোপকথন। তাতে বলা হয়েছে, টাকা কোনও সমস্যা হবে না। মধ্যপ্রাচ্য থেকে বাংলাদেশ হয়ে প্রচুর টাকা আসবে। এর মধ্যে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা শাদ ও অন্য জঙ্গিদের হাতে এসেও গিয়েছে।
একে ৪৭ কেনার জন্য শাদ অসমেরই এক কুখ্যাত অস্ত্র পাচারকারীকে অন্তত ২৫ লাখ টাকার বরাত দেয়। ওই বিপুল টাকার কিছু অংশ আগামও দেওয়া হয় অস্ত্র পাচারকারীকে। গোয়েন্দাদের ধারণা, চিন থেকে মায়ানমার ও বাংলাদেশ হয়ে ওই অস্ত্র এসে পৌঁছত আনসার জঙ্গিদের হাতে। এ ছাড়াও মুর্শিদাবাদের জঙ্গি মিনারুলের নির্দেশে আব্বাস উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে টাকা জোগাড় করে সংগঠনের তহবিল বাড়াতে শুরু করে।