দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: পেটের টানে কাঁকড়া ধরতে যাওয়াই কাল। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দক্ষিণ ২৪ পরগনা (South 24 Parganas) কুলতলি ও গোসাবায় বাঘের হানায় মৃত্যু হল দুই মৎস্যজীবীর। শোকের ছায়া এলাকায়। কান্নায় ভেঙে পড়েছে মৃতদের পরিবারের সদস্যরা।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে সঙ্গীদের সঙ্গে সুন্দরবনের ঝিলার জঙ্গলে গিয়েছিলেন কুলতলির বেশ কয়েকজন মৎস্যজীবী। তাঁদের মধ্যে ছিলেন চিত্ত সরকার, সুবল মণ্ডল, সুব্রত কয়াল। বেলা ১০ টা নাগাদ আচমকা তাঁদের উপর হামলা চালায় একটি দক্ষিণরায়। চিত্ত সরকারকে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যায়। সঙ্গীরা তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও কোনও লাভ হয়নি। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী এখনও মেলেনি ওই মৎস্যজীবীর দেহ। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
[আরও পড়ুন: ঘনিষ্ঠদের বসানো হচ্ছে বড় পদে! একাধিক অভিযোগ নিয়ে শীর্ষনেতৃত্বকে চিঠি বিজেপির ‘আদি’ নেতাদের]
এদিকে শুক্রবার কুলতলির দেউলবাড়ির বাসিন্দা শংকর সরদার তিন সঙ্গীকে সঙ্গে নিয়ে সুন্দরবনের বেনিফেলি জঙ্গলে গিয়েছিলেন কাঁকড়া ধরতে। শনিবার দুপুরে আচমকা বাঘ তাঁদের নৌকোয় হামলা চালায়। বাঘের হামলায় গুরুতর জখম হন শংকর। পরে আহত অবস্থায় ওই মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সোমবার রাতে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। গত রবিবারও কাঁকড়া ধরতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে একজনের।
ইতিপূর্বে এই অঞ্চলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের শিকার হয়েছেন একাধিক মৎস্যজীবী। অনেকে আবার প্রাণপণে লড়াই করে জীবন বাঁচিয়ে ফিরে এসেছে। যেমন ৩০ অক্টোবর পাথরপ্রতিমার সত্যদাসপুর সবুজবাজার থেকে মোট ছ’জন কাঁকড়া ধরতে যায় চুলকাঠি জঙ্গলের বিজয়াড়া চরে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সুবল মল্লিক, তাঁর স্ত্রী কাজল মল্লিক, ভারতী মল্লিক, অবিনাশ নায়েক, সরস্বতী ভক্তা, শম্ভু নায়েক। পরিকল্পনা মোতাবেক খাঁড়িতে কাঁকড়াও ধরেন তারা। রাতে নৌকোয় ছিলেন ওই ছ’জন। নৌকোর উপর ছাউনিও দেওয়া ছিল। আচমকা ছাউনির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে দক্ষিণরায়। অবস্থা বেগতিক বুঝে কাঁকড়া ধরার লাঠি, শাবল দিয়ে বাঘকে পালটা আক্রমণ করে মৎস্যজীবী অবিনাশ। লাগাতার আক্রমণের জেরে চম্পট দেয় বাঘ।