সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: রবিবার সন্ধেয় ডায়মন্ড হারবার জেটি ঘাট থেকে তলিয়ে গিয়েছিল দুই নাবালিকা। প্রায় ৪৫ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুরের সুতাহাটা এলাকায় অর্থাৎ হলদিয়ার কাছে হলদি ও হুগলি নদীর সংযোগস্থল থেকে উদ্ধার দুই বোনের দেহ। কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবারের সদস্যরা।
ছত্তিশগড়ে বাসিন্দা জাকির হোসেন কিছুদিন আগে তপসিয়ার পঞ্চাননতলায় আত্মীয়ের বাড়িতে আসেন। রবিবার তাঁর দুই কন্যা আতিফা নাসরিন (৫), সিদ্রা তাসরিন (৭) ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সেখান থেকে ঘুরতে গিয়েছিলেন জাকির হোসেন। রবিবার সন্ধেয় কুঁকড়াহাটি থেকে ভেসেলে ডায়মন্ড হারবার জেটি ঘাটের উদ্দেশে রওনা হন তাঁরা। সন্ধে সাড়ে ছ’টা নাগাদ ভেসেল পৌঁছয় ডায়মন্ড হারবার জেটি ঘাটে। ওই ভেসেলটি যেখানে নোঙর করা হয় তার সামনে রাখা ছিল আরেকটি ভেসেল। তাতেই ঘটে দুর্ঘটনা। দুটি ভেসেলের মাঝে ফাঁক ছিল। কিন্তু নামার সময় তা খেয়াল করেনি ওই দুই বোন। ফলে ফাঁক দিয়ে গলে পড়ে যায় নদীতে।
[আরও পড়ুন: মালবাজারে হড়পা বানে মৃতদের পরিবারের পাশে মুখ্যমন্ত্রী, হাতে তুলে দিলেন সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র]
রাতেই শুরু হয় হয় তল্লাশি। জেটি ঘাটে যান খোদ এসডিও। রাতে দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চালালেও হদিশ মেলেনি তাদের। সোমবার সকালে ফের শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, ক্যুইক রেসপন্স টিম রয়েছে ঘটনাস্থলে। কাকদ্বীপ থেকে নিয়ে আসা হয় ডুবুরির দল। আকাশে ওড়ানো হয় ড্রোন। কিন্তু তাতেও হদিশ মেলেনি দুই নাবালিকার। অবশেষে মঙ্গলবার দুপুরে পূর্ব মেদিনীপুরের সুতাহাটা এলাকায় হলদি ও হুগলি নদীর সংযোগস্থলে প্রথমে মৎস্যজীবীদের জালে ওঠে আতিফা নাসরিনের দেহ। মৎস্যজীবীদের তরফে খবর দেওয়া হয় ডায়মন্ড হারবার পুলিশে। ওই নাবালিকার দেহ উদ্ধারের কিছুক্ষণের মধ্যে একই জায়গা থেকে উদ্ধার হয় সিদ্রা তাসরিনের দেহ।
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই দুই নাবালিকার দেহ শনাক্ত করেছে পরিবারের সদস্যরা। পুলিশের তরফে দেহ দুটি পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। পোস্টমর্টেম শেষে দেহ তুলে দেওয়া হবে পরিবারের হাতে। বেড়াতে এসে দুই সন্তানকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃতদের বাবা ও মা।