অভিরূপ দাস: জ্বর ও গলা ব্যথা নিয়ে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। কিন্তু, করোনা সন্দেহে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধাকে আইসিইউতে ঢুকিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে রিপোর্টে কোভিড নেগেটিভ আসলেও কিন্ত তাঁকে আর হাসপাতালের জেনারেল বেডে দেওয়া হয়নি। বিষয়টি স্বাস্থ্য কমিশনের নজরে পড়তেই চিকিৎসার বিল থেকে রোগীর পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা ফেরানোর নির্দেশ দিল রাজ্যের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন।
সত্তর বছরের বৃদ্ধা যুথিকা চক্রবর্তীর অভিযোগ, প্রতিদিন ৬ হাজার টাকা করে সাতদিনে শুধু বেড ভাড়া বাবদ ৪২ হাজার টাকা নিয়েছে হাসপাতাল। বিল বাড়ানোর জন্যই ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁকে জেনারেল বেডে দেয়নি। প্রসঙ্গত, ওই হাসপাতালে দিনপ্রতি জেনারেল বেড ভাড়া ছিল মাত্র ১৮০০ টাকা। কিন্তু, যুথিকাদেবীকে আইসিইউতে রেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা বাবদ মোট বিল করেছে ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৭৩৯ টাকা। তবে সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে তাদের রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন (WBCERC) চিকিৎসার বিল থেকে আরও ২৫ হাজার টাকা ছাড় দিতে বলেছে।
[আরও পড়ুন: শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে একাধিক প্রশ্নের উত্তর অধরা, বিভ্রান্ত টেট উত্তীর্ণরা]
এই ঘটনার মাঝেই প্যাকেজের থেকে দ্বিগুণ বিল নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আলিপুরের বিএম বিড়লা (BM Birla) হার্ট রিসার্চ সেন্টারের বিরুদ্ধে। সল্টলেকের বাসিন্দা আদিত্য অপূর্বর অভিযোগ, তাঁর বাবাকে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করাতে নিয়ে গিয়েছিলেন ওই হাসপাতালে। প্রথমে বলা হয় অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি ১ লক্ষ ৩৫ হাজার। পরে বলা হয় ওটা আদতে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার। কেন একেকবার একেকরকম প্যাকেজ? হাসপাতালের দাবি, প্যাকেজ নির্ভর করে কি ধরনের ইনসিওরেন্স রয়েছে তার ওপর। শেষ পর্যন্ত সব মিলিয়ে চিকিৎসার খরচ দাঁড়ায় ৩ লক্ষ ৬৫ হাজার। এই বিল নিয়েই স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের দ্বারস্থ হন আদিত্য।
তাঁর দাবি, হাসপাতাল আগে বলেছিল ৩ লক্ষ ১৩ হাজারের সমস্ত কিছু হয়ে যাবে। আচমকা বিল বাড়িয়ে দেওয়ায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠায় স্বাস্থ্য কমিশন। হাসপাতালের দাবি, অস্ত্রোপচারের সময় একটা বেলুন ব্যবহার করতে হয়েছে। তাতেই প্রায় ৪৫ হাজার টাকার মতো অতিরিক্ত খরচ হয়েছে। যদিও হাসপাতালের এই বক্তব্যকে সন্তোষজনক মনে করেনি কমিশন। এপ্রসঙ্গে কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ৫০ হাজার টাকা রোগীর পরিবারকে ফেরত দিতে বলা হয়েছে।