সুকুমার সরকার, ঢাকা: প্রতীক্ষার অবসান। বৃহস্পতিবার বেলায় ভারত থেকে ঢাকায় (Dhaka) পৌঁছল করোনা প্রতিষেধক (Corona vaccine) কোভিশিল্ড। পুণের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি করোনা টিকার ২০ লক্ষ ডোজ উপহার হিসেবে প্রথম দফায় তুলে দেওয়া হল বাংলাদেশের (Bagladesh)হাতে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা নাগাদ এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ বিমানে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছয় ভ্যাকসিনের প্রথম দফার ডোজগুলি। পরবর্তীতে ঢাকা পাবে কোভিশিল্ডের ১৫ লক্ষ ডোজ। বাংলাদেশে টিকা পৌঁছনোর পরই ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর টুইটে লেখেন, করোনা টিকা ঢাকায় পৌঁছেছে। এই ভ্যাকসিন মৈত্রী বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পুনরায় প্রমাণ করল।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ২০ লক্ষ ভ্যাকসিনের ডোজ নিয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেয় এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ বিমান। তা ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণের পরপরই দ্রুত সময়ে ফর্কলিফটের (পণ্যসামগ্রী ওঠানামায় ব্যবহৃত বিশেষ যন্ত্র) মাধ্যমে টিকাগুলি বিমান থেকে নামানো হয়। পরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ট্রাকে করে মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে তা পৌঁছে দেওয়া হয় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের ইপিআই সংরক্ষণাগারে। বাংলাদেশে মাত্র ৪ মার্কিন ডলারে কোভিড ভ্যাকসিনের প্রতিটি ডোজ বিক্রি করবে সেরাম ইনস্টিটিউট। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা দাঁড়ায় প্রায় ৩৪০ টাকা। তবে অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, গড়ে সম্ভবত ৩ মার্কিন ডলার দামে বাংলাদেশ সরকার ভ্যাকসিন পেতে পারে।
[আরও পড়ুন: লকডাউনেও বদলায়নি পরিবেশ! ফের বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তকমা জুটল ঢাকার]
এদিন দুপুরে ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘পদ্মা’য় বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হাতে উপহারের এই টিকা তুলে দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী। উপহারের টিকার বাইরে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকো ফার্মার চুক্তি রয়েছে। অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ছাড়া করোনার এই টিকা কেউ পাবেন না আপাতত। রাজধানীর চারটি হাসপাতালে এ মাসের শেষ দিকে টিকাদানের মহড়া বা ড্রাই রান হবে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দেশব্যাপী টিকা কার্যক্রম শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। শুরুতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান টিকা দেওয়ার অনুমতি পাচ্ছে না।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ভোটের কায়দায় ‘টিকাদান কার্ড’ দেখালেই মিলবে ভ্যাকসিন]
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান বুধবার বলেছেন, এ মাসের ২৭ বা ২৮ তারিখে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে টিকা দেওয়া শুরু হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ভারচুয়ালি যোগ দিতে পারেন। এই দিন প্রথম সারির করোনাযোদ্ধা অর্থাৎ স্বাস্থ্যকর্মী, শিক্ষক, সাংবাদিক, পুলিশ-সহ বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত ২০ থেকে ২৫ জনকে টিকা দেওয়া হবে। তবে সম্পূর্ণ পরিকল্পনা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব জানিয়েছেন, বেক্সিমকোর মাধ্যমে আসা টিকা ৮ ফেব্রুয়ারির আগে সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া হবে। তরপরই একযোগে দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে। ১৮ বছরের কম বয়সী ও গর্ভবতী নারী-সহ মোট ৭ কোটি মানুষ আপাতত টিকা পাবেন না।