সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় সিনেমায় ‘অ্যাংরি ইয়ং ম্যান’ থিম নতুন নয়। ট্রেন্ড শুরু সেই অমিতাভ বচ্চনের হাত ধরে। কালে কালে সেই ধারা বহন করে এসেছেন বলিউডের বিভিন্ন সময়ের হিরোরা। তবে ২০২৩ সালে হিন্দি সিনেদুনিয়ার বক্স অফিসে প্রকৃত হিরো কিন্তু অ্যাকশনই। এবছর ‘বিগ বাজেট মুখ’রা কেউ হতাশ করেননি। শাহরুখ খান, সানি দেওলের দাপুটে প্রত্যাবর্তন থেকে পরিচালকের আসনে করণ জোহরের কামব্যাক। রণবীর কাপুরের কেরিয়ারের সবথেকে বড় হিট… বহু মাইলস্টোনের সাক্ষী তেইশ। বড়পর্দায় লার্জার দ্যান লাইফ প্রোটাগনিস্টের দৌরাত্ম্য, অ্যাকশনের মারপ্যাঁচের দিকেই দর্শকদের পাল্লা ভারী থেকেছে এবছর। পুরুষতন্ত্রের আস্ফালন মহিমান্বিত করা সিনেমাগুলোই এগিয়ে থেকেছে তাঁদের রায়ে। যার ফলস্বরূপ বলিউড সবমিলিয়ে ১.৩ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করেছে। যা বিগত কয়েক দশকে রেকর্ড আয়! যার সিংহভাগই এসেছে অ্যাকশন ছবি থেকে।
বলিউডের ইতিহাসে প্রথমবার এমন হল। একসঙ্গে এতগুলো অ্যাকশন সিনেমা মুক্তি পাওয়া এবং সফল হওয়া! রক্তস্নাত ফ্রেম, মারপিটের ধুন্ধুমার মারপ্যাঁচ… অ্যাকশন সিকোয়েন্সের প্রেক্ষিতে হিন্দি সিনেদুনিয়া এবছর সত্যিই ‘প্রাপ্তবয়স্ক’। তাক লাগানো আগ্নেয়াস্ত্র, কুড়ুল, হ্যান্ডপাম্প… শত্রুদের কাবু করতে বলিউডি ফ্রেমে অস্ত্রের ভিড় কিন্তু চর্চার শিরোনামে রাজত্ব করেছে। ফলে এবছরই যেন বলিউডে অ্যাকশন ঘরানার পুনর্জন্ম হল। দর্শকদের এহেন স্বাদবদলই বক্স অফিসের অগ্নিপরীক্ষায় রায় দিয়েছে। ‘পাঠান’, ‘জওয়ান’, ‘গদর ২’, ‘অ্যানিম্যাল’ থেকে ‘লিও’, ‘সালার’ সবকটা ছবিই অ্যাকশন প্যাকড। আর প্রত্যেকের মার্কশিটেই ব্লকবাস্টার নম্বর। প্রতিটা সিনেমার অ্যাকশন সিকোয়েন্স ডিজাইন প্রশংসার দাবিদার।
[আরও পড়ুন: নতুন বউকে নিয়ে মধুচন্দ্রিমায় মগ্ন আরবাজ, মালাইকা বলছেন, ‘নেগেটিভিটি দূরে থাক’]
অতিমারী-উত্তর পর্বে ধুঁকতে থাকা বলিউড যেন অ্যাকশন অবতারেই ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠেছে। করোনাকালে কমেডি, রম-কম, পারিবারিক ড্রামার মতো ঘরানাগুলো বাড়িতে বসে চুটিয়ে উপভোগ করেছেন দর্শকরা। ওটিটি প্ল্যাটফর্মের সমীক্ষায় সেরকমই রিপোর্ট মিলেছে। তবে এবছর অ্যাকশন সিনেমাকেই এগিয়ে রেখেছেন তাঁরা। বড়পর্দায় প্রিয় তারকাদের অ্যাকশন অবতার দেখে প্রেক্ষাগৃহ হাততালি, সিটির আওয়াজে ভরে উঠেছে। সে ‘পাঠান’, ‘জওয়ান’ হোক কিংবা ‘গদর ২’, ‘অ্যানিম্যাল’।
সিনে বাণিজ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, “কোনও বছর বলিউডে অ্যাকশন ঘরানার সিনেমা পর পর এত বিপুল অঙ্কের ব্যবসা করেনি। তবে তেইশ সালে কেতাদুরস্ত মারপিটের কেরামতিতেই ক্যাশবাক্স ফুলেফেঁপে উঠেছে।” ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের ধারণা, হয়তো KGF, RRR, ‘পুষ্পা’র মতো দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রির ধুন্ধুমার অ্যাকশন ঘরানার ট্রেন্ডই এবার হিন্দি সিনেদুনিয়ার অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে। এখন দেখার ২০২৪ কী খেল দেখায়? অ্যাকশন সিনেমার ট্রেন্ডই বজায় থাকে নাকি প্রত্যাবর্তন ঘটে রোম্যান্সের?