শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: যাদের শক্ত বুটের শব্দ আর ক্ষিপ্র চাউনিতে সবাই ডরায়! তারাও আজ সতর্ক, সাবধানী এবং কিছুটা আতঙ্কিতও। কারণ, শত্রু এখানে মানুষ নয়! অচেনা এক প্রাণী! অনেকটা চিতাবাঘের মতো দেখতে প্রাণীটিকে নিয়ে স্থানীয়দের পাশাপাশি আতঙ্কে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরাও। কারণ, তাদের ঘরের পাশেই এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে বিরাট চেহারার প্রাণীটি। মোবাইল ক্যামেরায় দৃশ্যবন্দি হয়েছে। পাওয়া গিয়েছে পায়ের ছাপও।
ঘটনাস্থল ধূপগুড়ির ঝুমুর সেতু সংলগ্ন কৃষি খামার এলাকা। এখানের একটি ভবনে রয়েছেন ভোটের নিরাপত্তার দায়িত্বে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। সেই ভবনের সীমানা প্রাচীরের উপর রাজকীয় মেজাজে ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রাণীটি। স্থানীয় এক যুবকের তোলা ৪১ সেকেন্ডের ভিডিও দেখে আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে প্রাণীটি চিতাবাঘ। তবে লেপার্ড ক্যাটের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না কেউ কেউ। যদিও ঝুঁকি নেয়নি বনদপ্তর। একে কেন্দ্রীয় বাহিনী তার উপর স্থানীয়দের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বাঘ ধরার খাঁচা এনে পেতে রেখেছেন তারা। তবে ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও প্রাণীটি খাঁচায় ধরা না পড়ায় আশপাশের বাসিন্দাদের মতোই উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরাও। বাহিনীকে অভয় দিতে ছুটে আসছে বনবিভাগ এবং পুলিশ আধিকারিকরা। প্রাণীটিকে যাতে দ্রুত ধরা যায় সেই চেষ্টাও শুরু হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘যতদিন তোমাদের বাবা বেঁচে আছে…’, আরিয়ান-সুহানার কাছে বড় প্রতিজ্ঞা শাহরুখের]
জানা গিয়েছে, সরকারি এই খামার বাড়িতে এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান রয়েছেন। রান্না, খাওয়ার সব ব্যবস্থাই রয়েছে ভিতরে। তাদের নিয়ে ধূপগুড়ির বিভিন্ন এলাকায় টহল দিচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। সোমবার বিকেলে স্থানীয় এক যুবক খামারের সীমানা পাঁচিলের উপর দিয়ে প্রাণীটিকে হেঁটে যেতে দেখেন। নিজের মোবাইল ফোনে সেই দৃশ্যবন্দিও করেন তিনি। মুহূর্তের মধ্যে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। সেই ছবি যা দেখে হাড়হিম অবস্থা স্থানীয়দের। উদ্বেগ ছড়ায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর মধ্যেও। ছুটে আসেন পুলিশ আধিকারিকরা।
ধূপগুড়ি থানার আইসি অনিন্দ্য ভট্টাচার্য জানান, দুর্ঘটনা এড়াতে সমস্ত রকমের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাহিনীর আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রাণীটিকে যাতে দ্রুত চিহ্নিত করে খাঁচাবন্দি করা যায় বনদপ্তরের তরফে চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি পুলিশও নজর রাখছে। বনদপ্তরের তরফেও এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর যাতে সতর্কভাবে চলাচল করেন সেই বার্তাও দেওয়া হয়েছে। বিন্নাগুড়ি ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়াডের রেঞ্জ অফিসার ধ্রুবজ্যোতি বিশ্বাস জানান, বাহিনীর আধিকারিকদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। তারাও সতর্কতা মেনে চলছেন। রাতের দিকে এলাকায় নজরদারি চলছে। দ্রুত যাতে প্রাণীটিকে ধরা যায় সেই চেষ্টা চলছে।