দেবব্রত মণ্ডল, ভাঙড়: একুশের বিধানসভা ভোটে লড়াইয়ের দম এবার উধাও। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে নওশাদ সিদ্দিকির দল আইএসএফের তেমন জোরাল ভূমিকা চোখে পড়েনি। এমনকী সবকটি আসনে প্রার্থীও ছিল না তাদের। বেশিরভাগ জায়গায় চতুর্থয় নিজেদের দৌড় শেষ করেছেন প্রার্থীরা। নির্বাচনের সময়ে রুটিন প্রচারে গিয়েই কার্যত দায়সারা কাজ সেরেছেন রাজ্যের একমাত্র আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। কিন্তু ভোট পরবর্তী সময়ে দাবি করলেন, তিনি ডায়মন্ড হারবারের প্রার্থী হলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারাতেন, প্রাক্তন করে দিতেন! এনিয়ে অবশ্য দলকেই দুষলেন নওশাদ। দল অনুমোদন করেনি বলে তিনি লোকসভার লড়াইয়ে ছিলেন না, এমনই বললেন।
ভাঙড় (Bhangar) বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে সংযুক্ত মোর্চা জোটের প্রার্থী হিসেবে জিতে নজির গড়েছিলেন নওশাদ সিদ্দিকি। আর সেই ভাঙড়েই চব্বিশের লোকসভা ভোটে (2024 Lok Sabha Election) অন্তত ৪০ হাজার ভোটে পিছিয়ে আইএসএফ। যদিও নওশাদের দাবি, ঠিকমতো ভোট হলে এই কেন্দ্রে ৫০ হাজারের বেশি লিড পেত তাঁর দল। উল্লেখ্য ভাঙড় কেন্দ্রটি যাদবপুর বিধানসভার অন্তর্গত। এই কেন্দ্রের তৃণমূল (TMC) প্রার্থী সায়নী ঘোষ প্রথমবার লোকসভার লড়াইয়ে নেমেই জয়ী হয়েছেন। প্রচার পর্বে সায়নী ভাঙড়ে বার বার গিয়েছেন, সেখানকার মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা বোঝার চেষ্টা করেছেন। যাদবপুরে তৃণমূলের জয়ের পথে যে ভাঙড় ছিল কাঁটার মতো, সায়নীর নিবিড় জনসংযোগে সেখানেও লিড পেয়েছে দল।
[আরও পড়ুন: রাজনীতির চাপে ইন্ডাস্ট্রি কি কম গুরুত্ব পাবে? উত্তর দিলেন দেব, রচনা, জুন, সায়নী]
এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে নওশাদের (Nawsad Siddique) দাবি খারিজ করছে সংখ্যাতত্বই। তাঁর আরও দাবি, ''আমার ইচ্ছা ছিল, ডায়মন্ড হারবারে দাঁড়ানোর। ওখানে প্রার্থী অবশ্যই অভিষেকবাবুকে হারাতাম, তাঁকে প্রাক্তন করে দিতাম। কিন্তু দল আমায় অনুমোদন দেয়নি। তাই আমি দাঁড়াইনি। তাছাড়া ডায়মন্ড হারবারে কীভাবে ভোট হয়েছে, সবাই জানে।''
[আরও পড়ুন: ফিরল ‘মারো মুঝে মারো’র স্মৃতি! বাবররা হারতেই ভাইরাল পাক যুবতীর ‘ম্যায় থক গয়ি হুঁ’ ভিডিও]
উল্লেখ্য, লোকসভার দামামা বেজে যাওয়ার পর থেকে ডায়মন্ড হারবারের (Diamond Harbour) মতো হাইভোল্টেজ কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) প্রতিদ্বন্দ্বী কে হবেন, তা নিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়েছে প্রায় সব বিরোধী দলকেই। বহুবার নওশাদের নাম নিয়ে জল্পনা উঠেছে। কিন্তু শেষমেশ সেই কেন্দ্রে আইএসএফ (ISF) প্রার্থী করেছে মজনু লস্কর নামে সংগঠনের এক কর্মীকে। ফলাফলের পরিসংখ্যানে ডায়মন্ড হারবারে তিনি চতু্র্থ হয়েছেন। আর অভিষেক জয়ী হয়েছেন রেকর্ড ৭ লক্ষেরও বেশি ভোটে। ফলে এহেন পরিস্থিতিতে 'কী হলে কী হতো' - নওশাদের সেই তত্ত্বকথায় আমল দিতে নারাজ রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ।
দেখুন ভিডিও: