সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: একটি কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদই শুধুমাত্র নন। তিনি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তাই গোটা রাজ্যেই প্রচার কাজের ব্যস্ততা। ইতিমধ্যেই বাংলার পাঁচ প্রান্তে লোকসভা ভোটের একপ্রস্ত প্রচার সারা হয়ে গিয়েছে। এবার তিনি নিজেরল সংসদীয় কেন্দ্রের লড়াইয়ে নামছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। এবারও ডায়মন্ড হারবার থেকে লড়ছেন তিনি। বুধবার থেকে তিনি আমতলার দলীয় কার্যালয়ে চানা তিনদিন বৈঠক করে চূড়ান্ত স্ট্র্যাটেজি ঠিক করতে চলেছেন বলে খবর। রাজ্যের এই হাইভোল্টেজ কেন্দ্রে এখনও পর্যন্ত বিরোধীরা কেউই প্রার্থী ঠিক করতে পারেনি। ব্যতিক্রম অবশ্য SUCI. তাঁরা প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দেওয়াল লিখনও শুরু করেছে। শুধু তাইই নয়, জ্বলন্ত ইস্যুগুলিকে হাতিয়ার করে প্রচারও চলছে। ফলে এই মুহূর্তে অভিষেকের প্রতিপক্ষ একমাত্র SUCI প্রার্থী।
জানা গিয়েছে, বুধবার অর্থাৎ ২৭ তারিখ অভিষেক যাবেন আমতলার (Amtala) পার্টি অফিসে। ২৮ ও ২৯ তারিখও এখানে থাকবেন তিনি। নিজের সংসদীয় এলাকার একেবারে তৃণমূল স্তরে নজর রয়েছে তাঁর। দলের সর্বস্তরের কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে তবে আসন্ন নির্বাচনী যুদ্ধের ঘুঁটি সাজাবেন বলে খবর। এখানে বেশ কয়েকটি জনসভা করার কথা অভিষেকের। তার সূচিও ঠিক হতে পারে এই তিনদিনের ম্যারাথন বৈঠক থেকে। গত দুবার এই কেন্দ্র থেকে বড়সড় ভোটের ব্যবধানে জিতে অভিষেক সাংসদ হয়েছেন। প্রথমবারের তুলনায় দ্বিতীয়বার ভোটের ব্যবধান আরও বেড়েছে। আর এবার অভিষেকের টার্গেট আড়াই থেকে তিন লক্ষ ভোটে জেতা। আর তাকে পাখির চোখ করে অত্যন্ত হিসেবি চাল দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তৃণমূলের সেনাপতি।
[আরও পড়ুন: বাংলার ‘মেয়ে’ মমতাকে ফের কুকথা দিলীপের! এবার কী বললেন বিজেপি প্রার্থী?]
চব্বিশের ভোটে (2024 Lok Sabha Polls) ডায়মন্ড হারবারের লড়াই আলোচনার কেন্দ্রে। এখানে এখনও প্রার্থী দিতে পারেনি বিজেপি। দফায় দফায় দিল্লিতে আলোচনা-রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেও শাসকদলের সর্বভারতীয় সভাপতিকে ভোটযুদ্ধে ঘায়েল করতে যুৎসই মুখ খুঁজে পাননি মোদি-শাহ-নাড্ডারা। কখনও অগ্নিমিত্রা পল, কখনও প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তো কখনও সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া কৌস্তভ বাগচীকে প্রার্থী করা হবে বলে জল্পনার জল গড়িয়েছে অনেক দূর। কিন্তু চূড়ান্ত হয়নি এখনও। বাম-কংগ্রেস জোটের আরেক শরিক আইএসএফের নওশাদ সিদ্দিকির জন্য ডায়মন্ড হারবার (Diamond Harbour)আসনটি কার্যত ছেড়েই রেখেছে। নওশাদ আবার লড়াইয়ের ঘোষণা করেও আপাতত পিছু হঠেছেন।
[আরও পডু়ন: বিজেপি ছাড়ছেন রুদ্রনীল! লোকসভায় টিকিট না পেয়েই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত?]
সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিরোধীদের কয়েক কদম টেক্কা দিল SUCI. অভিষেকের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়ে দিয়েছে। এদিন বারুইপুরের সাংবাদিক বৈঠক করে প্রার্থীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হল। এও এক শিক্ষণীয় বিষয় বইকী। যে দলকে নিয়ে সে অর্থে চর্চা হয় না, চমক দেওয়ার তাড়না নেই, শুধু ভিতরে ভিতরে সংগঠনের জোরেই প্রার্থী স্থির করে রেখেছিল তারা। লড়াইয়ের লক্ষ্যও স্থির। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ তরুণ মণ্ডল বলেন, সারা ভারতবর্ষ বেকার সমস্যায় জর্জরিত। অসাম্য বাড়ছে সমাজের বিভিন্ন স্তরে। ২ লক্ষ চাকরির প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। ১৫ লক্ষ করে টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাইনি কোন ভারতবাসী। তারপরেও মোদি ভোট প্রচারে এসে গ্যারান্টি দিচ্ছেন। এনিয়ে একটি পুস্তিকাও প্রকাশ করা হয় SUCI-এর তরফ থেকে। এই পুস্তিকায় একদিকে যেমন কেন্দ্রের শিক্ষানীতির সমালোচনা করা হয়েছে, অন্যদিকে ইলেক্টোরাল বন্ড নিয়ে যেভাবে দুর্নীতি হয়েছে, তারও সমালোচনা করা হয়েছে এই বইতে।