অর্ণব আইচ: ট্যাব কাণ্ডে তদন্তের গতি বাড়াচ্ছে রাজ্য় পুলিশ। গত দুদিনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও ২১ জনকে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে কয়েক লক্ষ টাকা। ফ্রিজ করা হয়েছে বেশ কয়েকটি অ্যাকাউন্ট। সূত্রের দাবি, 'তরুণের স্বপ্ন' চুরির কায়দায় ২০০৮ সালে হাতানো হয়েছিল কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকাও। 'জামতাড়া গ্যাং'য়ের কায়দায় উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় বসেই নাকি বোনা হয়েছিল সেই ষড়যন্ত্রের জাল! এবারও এই এলাকারই 'প্রতারক' বাবর রাজ্য পুলিশের স্ক্যানারে। মনে করা হচ্ছে, এই দুর্নীতির 'মাস্টারমাইন্ড'ও সে।
একের পর এক জেলার একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা 'চুরি' গিয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলায় ১৪০টি মামলা দায়ের হয়েছে। রাজ্য় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে মোট ৪০ জন। এর মধ্যে ৫ জন পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা। তারাই বিভিন্ন জায়গায় এই জাল ছড়িয়েছিল বলে অনুমান। তবে ঝাড়গ্রাম, আসানসোল, উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলারও অনেকে জড়িত মনে করছে পুলিশ। ইতিমধ্যে ৭৯৭টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কয়েক লক্ষ টাকা।
তদন্তে নেমে উল্লেখযোগ্য একটি বিষয় নজরে এসেছে পুলিশের। ২০০৮ সালে চোপড়া থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করেছিল কেরল পুলিশ। কেন্দ্রীয় একটি প্রকল্পের টাকা সরানো হয়েছিল। সেই একই কায়দায় হাতানো হয়েছে ট্যাবের টাকাও। অর্থাৎ জালিয়াতির জাল শুধুমাত্র বাংলায় নয়, ছড়ানো রয়েছে ভিন রাজ্যেও। বাংলায় বসে কেন্দ্রের টাকাও হাতানো হয়েছে। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যে এই এলাকা থেকে ট্যাব দুর্নীতিতে গ্রেপ্তার হয়েছে কয়েকজন। তবে কি এবার জামতাড়া হয়ে উঠছে বাংলার চোপড়াও? প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে অভিনব জালিয়াতির ফিকির খুঁজছে 'চোপরা গ্যাং'?
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই জালিয়াতির ইঙ্গিত আগেই দিয়ে রেখেছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, শুধু বাংলা নয়, মহারাষ্ট্র, রাজস্থানের প্রকল্পের টাকাও হাইজ্যাক করা হয়েছে। তদন্ত যত এগোচ্ছে ততই স্পষ্ট হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবির সত্যতা।