সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিচারব্যবস্থাকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র চলছে। ফেক নিউজ ও চরিত্র হননের মতো পন্থা অবলম্বন করে মানুষের মনে বিচারব্যবস্থার প্রতি অবিশ্বাস তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে একটি গোষ্ঠী। এই অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কে চিঠি লিখেছেন ২১ জন প্রাক্তন বিচারপতি।
চন্দ্রচূড়কে লেখা চিঠিতে প্রাক্তন বিচারপতিদের আশঙ্কা, 'সংকীর্ণ রাজনৈতিক মানসিকতায় ব্যক্তিগত স্বার্থে দেশের বিচার ব্যবস্থার আস্থা নষ্টের চেষ্টা চলছে। 'দুর্নীতির অভিযোগে দেশের একের পর এক রাজনৈতিক নেতা বর্তমানে জেলবন্দি। ফেক নিউজ ও চরিত্র হননের মতো পন্থা অবলম্বন করে মানুষের মনে বিচারব্যবস্থার প্রতি অবিশ্বাস তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে একটি গোষ্ঠী। এহেন ঘটনায় আমরা খুবই উদ্বিগ্ন।' চিঠিতে সরাসরি কোনও ব্যক্তি, রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের নাম নেওয়া হয়নি। তবে রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন, বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা নষ্টের উদ্বেগ প্রকাশ করে আসলে বিরোধীদেরই নিশানা করা হচ্ছে। কারণ, বিগত দিনে বেশ কয়েকটি ইস্যুতে বিচারব্যবস্থার প্রতি ক্ষোভপ্রকাশ করতে শোনা যায় বিরোধীদের।
প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে চিঠিতে প্রাক্তন বিচারপতিরা লিখেছেন, 'মিথ্যা ও ভুল তথ্য তুলে ধরে বিচারব্যবস্থার প্রতি দেশের জনগণের সাধারণ মানুষের ভাবাবেগ নষ্টের চেষ্টা চলছে। এই ঘটনা শুধু অনৈতিক নয় গণতন্ত্রের মৌলিক নীতির জন্য ক্ষতিকর।'
[আরও পড়ুন: হুড়মুড়িয়ে গায়ের উপর ভেঙে পড়ল আস্ত বহুতল, যোগীরাজ্যে মৃত ২, আহত অন্তত ১৭]
এই ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের আবেদন জানিয়ে প্রাক্তন বিচারপতিরা জানান, 'এই কঠিন পরিস্থিতিতে আমরা বিচার বিভাগের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াতে প্রস্তুত। বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বিচারবিভাগকে বাঁচাতে হবে। বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য কিছু মানুষ নিজেদের মনগড়া গল্প তৈরি করে সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করার চেষ্টার বিরুদ্ধে লড়তে হবে।' যে ২১ জন প্রাক্তন বিচারপতি এই চিঠি লিখেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন শীর্ষ আদালতের ৪ জন প্রাক্তন বিচারপতি। বাকি ১৭ জন দেশের একাধিক হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি।
[আরও পড়ুন: ‘টুম্পা সোনা’র পর এবার ‘জামাল কুদু’, ফের প্যারোডি গান বেঁধে ভোটপ্রচারে সিপিএম]
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতি সময়ে দিল্লি, ঝাড়খণ্ড, বাংলা-সহ একাধিক অবিজেপি রাজ্যে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন একের পর এক বিরোধী নেতা। বাদ যাননি খোদ মুখ্যমন্ত্রীও। নির্বাচনের আগে এই গ্রেপ্তারির ঘটনায় সরাসরি বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে বিরোধীরা। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দিকে উঠেছে পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগ। এমনকী বিরোধী শিবিরের তরফে একাধিকবার অভিযোগ তোলা হয়েছে, বিচারব্যবস্থার একাংশও নিজেদের দায়িত্ব ভুলে পক্ষপাত করছে। সম্প্রতি বাংলায় হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এহেন পরিস্থিতির মাঝে ২১ প্রাক্তন বিচারপতির এই চিঠি নিশ্চিতভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।