চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: ডেঙ্গু প্রতিরোধে এবার প্রতিটি ওয়ার্ডে ফিভার ক্লিনিক করছে হলদিয়া পুরসভা। পুরসভার ২৯টি ওয়ার্ডে এই ক্লিনিক করার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। যে সমস্ত ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের মধ্যে জ্বরে আক্রান্তদের সংখ্যা বেশি, সেই সব ওয়ার্ডগুলোকে চিহ্নিত করে ৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে ফিভার ক্লিনিকের কাজ। ইতিমধ্যে ১৬৫ জনের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাতে অবশ্য কারও শরীরে ডেঙ্গুর জীবাণু পাওয়া যায়নি। তবে কর্মসূত্রে হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু, বিহার, বাংলাদেশে থাকা বেশ কয়েকজন জ্বরে আক্রান্ত হয়ে নিজেদের হলদিয়ার বাড়িতে ফিরেছেন।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্টের শেষ পর্যন্ত রক্ত পরীক্ষায় ২০ জনের শরীরে ডেঙ্গুর জীবাণু ধরা পড়ে। তাঁদের মধ্যে ১৯ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বাকি একজন এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে এই অস্থায়ী ফিভার ক্লিনিকের পরিবর্তে নয়টি স্থায়ী ফিভার ক্লিনিক করার পরিকল্পনাও রয়েছে পুরসভার। সেইসঙ্গে মশা জন্মানোর আগে লার্ভা নিধনে জোর দেওয়া হয়েছে পুর এলাকায়। সেই জন্য ২১৭টি টিম গড়ে পুরসভার ২৯টি ওয়ার্ড জুড়ে চলছে লার্ভা নিধনের জোরদার অভিযান। প্রতিটি টিমের অধীনে রয়েছে ৩০০টি বাড়ি। সেই বাড়িগুলোর চারপাশের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার সঙ্গে ড্রেনের জমা জল সরানোর বিষয়টি তদারকি করবেন টিম সদস্যরা। তাঁরাই লার্ভামুক্ত পরিবেশ বজায় রাখার মূল কাজ করবেন।
জানা গিয়েছে, যে সমস্ত টিম এই কাজে সফল হবে, পুরসভার তরফে তাঁদের সংবর্ধিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই ডেঙ্গুমুক্তির উদ্দেশ্যে লার্ভামুক্ত পরিবেশ তৈরির এই কর্মসূচিতে টিমগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছে। হলদিয়া পুরসভার প্রশাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘ডেঙ্গু-শূন্য পরিবেশ গড়তে আমরা লার্ভামুক্ত পরিবেশ তৈরিতে বিশেষ জোর দিয়েছি। বিভিন্ন ওয়ার্ডে যে সমস্ত টিম রয়েছে, প্রতিটি এলাকা, বাড়ির পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে লার্ভা নিধনের কাজ শুরু হয়েছে। সম্মিলিত এই প্রয়াসে এলাকার মানুষজনের সহযোগিতাও প্রয়োজন রয়েছে। সকলের চেষ্টা, সচেতনতায় হলদিয়া পুরসভা এলাকা হোক ডেঙ্গু-শূন্য।’’এই কর্মসূচির অধীনে বিভিন্ন ওয়ার্ডের স্কুলগুলোতে শুরু হয়েছে ডেঙ্গু সচেতনতা প্রচারের কাজ। রোগ ধরা পড়লে কি কি করণীয় সে বিষয়েও সঠিক ধারণা দেওয়া হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের। এই কর্মসূচির মাধ্যমে পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলায় এখন ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিশেষ জোর দিয়েছে হলদিয়া পুর কর্তৃপক্ষ।