ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: কলকাতাকে (Kolkata) নিয়ে ক্রমশ উদ্বেগ বাড়ছে স্বাস্থ্যভবনের। একদিকে উৎসবের মরশুমে বল্গাহীন উচ্ছ্বাস তো অন্যদিকে মাস্ক ব্যবহারে অনীহা। যার জেরে স্বাস্থ্যদপ্তরের মাথাব্যথা বাড়াচ্ছে কলকাতা। যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। নতুন বছরের প্রথম দিনই রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে চার হাজার পার করল। কলকাতায় সংক্রমিত হয়েছেন ২ হাজার ৩৯৮ জন।
এর মাঝে চিন্তা বাড়িয়েছে ওমিক্রন (Omicron) সংক্রমণ। শনিবার বিকেলেরে স্বাস্থ্যদপ্তরের রিপোর্ট বলছে, বাংলায় ওমিক্রন সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৫। আজকের রিপোর্ট বলছে, ওড়িশা থেকে এ রাজ্যে আসা এক ব্যক্তি ওমিক্রন আক্রান্ত হয়েছেন। আপাতত বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। এদিকে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে রাজ্যে আগত এক ব্যক্তির শরীরেও মিলেছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট। বিদেশ থেকে আসা আরও ৫ জন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্ত।
[আরও পড়ুন: যোগীর সভায় ‘জয় শ্রীরাম’ বলে বিপাকে মুসলিম যুবক, একঘরে করল প্রতিবেশীরা, মিলল খুনের হুমকি]
রাজ্যে করোনার প্রথম ঢেউয়ে দৈনিক সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪ হাজারের সামান্য বেশি। মহামারীর ‘তৃতীয় ঢেউ’-র শুরুতেই সেই সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিল করোনা। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে সংক্রমিত হল ৪ হাজার ৫১২ জন। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই কলকাতার বাসিন্দা। দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে থাকা উত্তর ২৪ পরগনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬৮৮। তৃতীয় স্থানে হাওড়া (৩৪৪)। এদিন রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৬ লক্ষ ৪২ হাজার ৯৯৭ জন। তাঁদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৬ লক্ষ ৯ হাজার ৯২৪ জন। যার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯১৩ জন। তবে চিন্তা বাড়িয়ে ঊর্ধ্বমুখী অ্যাকটিভ কেস। এদিন চিকিৎসাধীন করোনা রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৫৯০ বেড়েছে। ফলে সংখ্যাটি দাঁড়াল ১৩ হাজার ৩০০ জন।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৩৭ হাজার ৫৪২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, রাজ্যে সংংক্রমণের হার বেড়েছে অনেকটাই। পজিটিভিটি রেট দাঁড়িয়েছে ১২.০২ শতাংশ। কমেছে সুস্থতার হার (৯৭.৯৯ শতাংশ)। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে সুস্থ হয়েছেন ১,৯১৩ জন। ফলে করোনাজয়ীর সংখ্যা দাঁড়াল ১৬ লক্ষ ৯ হাজার ৯২৪ জন।
তবে এমন পরিস্থিতিতে স্বস্তি একটাই। রাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা এখনও বাড়েনি। গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলায় মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৯ হাজার ৭৭৩ জন।
[আরও পড়ুন: মহামারীতেও ৮% অর্থনৈতিক বৃদ্ধি, রেকর্ড বিদেশি বিনিয়োগ, বছর শুরুতে জানালেন প্রধানমন্ত্রী]
স্বাস্থ্যদপ্তর বলছে, ওমিক্রন দ্রুত সংক্রমণ ছড়ালেও মৃত্যুর হার কম। আবার ওমিক্রনের পাশাপাশি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট (Delta Variant) অনেক বেশি প্রাণঘাতী। রাজ্যে দুই ভ্যারিয়েন্ট-ই একসঙ্গে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। আর ওমিক্রন ও ডেল্টার এই জোড়া ফলা চিন্তা বাড়াচ্ছে।