সুকুমার সরকার, ঢাকা: সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সংরক্ষণ বাতিলের দাবিতে গর্জে উঠেছে বাংলাদেশ। দিকে দিকে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ-মিছিল অব্যাহত। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে ছাত্রলিগ। কড়া হাতে আন্দোলন দমনে নেমেছে পুলিশ। অসমর্থিত সূত্রে খবর, সংঘর্ষের জেরে বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা ৪০ পেরিয়ে গিয়েছে। আজ, শুক্রবারের রক্তাক্ত হল পদ্মাপাড়। ঝরেছে ৩টি প্রাণ। রাজধানী ঢাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। বাতিল হয়েছে ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস। আজ ও আগামিকাল শনিবার বাতিল থাকবে এই ট্রেনটি।
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার ঢাকায় সর্বাত্মক অবরোধ (কমপ্লিট শাটডাউন) কর্মসূচ ঘোষণা করে। যার ফলে ঢাকা-সহ সারা দেশ প্রায় অচল হয়ে পড়ে। রাজধানী ছাড়াও দেশের ৪৭টি জেলায় গতকাল দিনভর বিক্ষোভ, অবরোধ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে গতকাল ২৭ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। শুধু ঢাকাতেই প্রাণ হারান ১৯ জন। আজ, শুক্রবারেও ঘটেছে প্রাণহানি।
নিহত ৩ জন হলেন আবদুল গনি, রাকিব ও রাসেল। আবদুল গনি (৪৫) ও রাকিবকে (২২) আজ দুপুর ২টোর দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেআনা হয়। সেখানেই তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে রাসেলকে মৃত ঘোষণা করা হয় রামপুরার ফরাজী হাসপাতালে। মৃত আবদুল গনির ছেলে আল আমিন জানান, তাঁর বাবা গুলশানের একটি হোটেলে মিস্ত্রির কাজ করতেন। আজ সকালে উত্তর বাড্ডার বাসা থেকে কাজের জন্য বের হয়েছিলেন। পরে তাঁর গুলিবদ্ধ হওয়ার খবর পান আমিন। রাকিবের মাথাতেও আঘাতের চিহ্ণ দেখা গিয়েছে। রাসেলের বিষয়ে এখনও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। আজ এখনও পর্যন্ত আহতের সংখ্যা ২০০। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁদের।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্ট হয়ে দেশে ফিরেছেন বহু ভারতীয় শিক্ষার্থী। ভারতে ফেরায় অপেক্ষায় আরও অনেকে ভিড় জমিয়েছেন সীমান্তে। জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ৭০ জন পড়ুয়া ভারতে ফিরেছেন। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বন্ধ মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা।