সুকুমার সরকার, ঢাকা: সরকারি চাকরিতে কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সারা দেশে চলছে 'কমপ্লিট শাটডাউন'। এর মধ্যেই রাজধানী ঢাকার উত্তরায় পুলিশের গুলিতে নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। এছাড়া যাত্রাবাড়ি ফ্লাইওভারে বুধবার মধ্যরাতে গুলিতে মৃত্যু হয় ১ পড়ুয়ার।
সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সংরক্ষণ বাতিলের দাবিতে উত্তাল বাংলাদেশ। আন্দোলনে সামিল হাজার হাজার শিক্ষার্থী। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে ছাত্রলিগের সদস্যরা। আজ, বৃহস্পতিবার কমপ্লিট শাটডাউন (সর্বাত্মক অবরোধ) কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীরা। শুধু হাসপাতাল ও জরুরি পরিষেবা ছাড় দেওয়া হয়েছে। অবরোধ চলাকালীনই পুলিশের সঙ্গে পড়ুয়াদের সংঘর্ষ বাঁধে। পদ্মাপাড়ের দক্ষিণের জেলা মাদারীপুরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের বচসা হয়। পরিস্থিতি চরম আকার নেয় ঢাকাতেও। উত্তরায় পুলিশের গুলিতে নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এছাড়া সংঘর্ষে ১০ পুলিশ সদস্য, ২ সাংবাদিক-সহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। টাঙ্গাইল জেলাও রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছে। বুধবার মধ্যরাতেও পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় ১ পড়ুয়ার।
বাংলাদেশের এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছে চিন। বৃহস্পতিবার বিদেশ মন্ত্রকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ঢাকায় নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, "এই কোটা সংস্কার আন্দোলন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমরা এনিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নই। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ সরকারের এই সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা রয়েছে।" ফলে এই পরিস্থিতিতেও যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশেই রয়েছেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তা স্পষ্ট ইয়াও ওয়েনের বক্তব্যে।
এদিকে, অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আতঙ্কে হোস্টেল ছাড়তে শুরু করেছেন পড়ুয়ারা। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে থাকা ভারতীয়দের জন্য নির্দেশিকা জারি করেছে নয়াদিল্লি। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সেখানে থাকা ভারতীয়দের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে কয়েকটি নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজন না পড়লে বাড়ির বাইরে বেরবেন না। ভ্রমণ এড়িয়ে চলুন। যেকোনও সাহায্যের জন্য ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।’ ভারতীয়দের জন্য এমারজেন্সি নম্বরও চালু করা হয়েছে।