সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গৃহযুদ্ধে জ্বলছে মায়ানমার। প্রাণ ভয়ে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ। বিদ্রোহীদের দখলে চলে যাচ্ছে একের পর এক শহর। এবার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করেছে বিদ্রোহীরা। শুধু তাই নয়, গড় রক্ষায় ব্যর্থ হওয়ায় তিন সেনা আধিকারিককে ফাঁসির সাজা দিয়েছে জুন্টা বলে খবর।
কয়েকদিন আগেই চিন সীমন্তবর্তী লাউকাই শহরটি দখল করেছে বিদ্রোহীদের যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’। কৌশলগত দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই শহর। ফলে রীতিমতো ব্যাকফুটে জুন্টা। শুধু তাই নয়, এই পরাজয়ে ধাক্কা খেয়েছে বার্মিজ সেনার মনোবল। এএফপি সূত্রে খবর, শহর হাতছাড়া হওয়ার ‘অপরাধে’ তিন উচ্চপদস্থ সেনা আধিকারিককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে জুন্টা। জানা গিয়েছে, লাউকাই শহরের কমান্ডার-সহ ৩ ব্রিগেডিয়ার জেনারেলকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গত জানুয়ারি মাসেই অভিযুক্ত তিন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেয় সেনা। মায়ানমার সেনার আইন অনুযায়ী, অনুমতি ছাড়া নিজেদের পোস্ট থেকে চলে গেলে বা আত্মসমর্পণ করলে শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তবে কবে এই সাজা কার্যকর হবে তা এখনও জানা যায়নি।
গত কয়েকমাস ধরে শান প্রদেশের লাউকাই শহরে মায়ানমার সেনার সঙ্গে তীব্র লড়াই চলছিল তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর। অবশেষে জানুয়ারি মাসে শয়ে শয়ে সেনা আত্মসমর্পণ করে তথাকথিত বিদ্রোহীদের যৌথমঞ্চ ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্সে’র কাছে। গুরুত্বপূর্ণ এই শহরটি চলে যায় বিদ্রোহীদের দখলে। বিপুল সংখ্যায় সৈন্যদের আত্মসমর্পণ মায়ানমারের সেনার কাছে সবচেয়ে বড় ক্ষতি। তার পরই এনিয়ে পদক্ষেপ করে সামরিক জুন্টা সরকার।
[আরও পড়ুন: সরকারের MSP প্রস্তাব খারিজ, ২১শেই ‘দিল্লি চলো’ কৃষকদের]
উল্লেখ্য, মায়ানমারের তিন বড় বিদ্রোহী গোষ্ঠী টিএনএলএ, আরাকান আর্মি ও এমএনডিএএ। একসঙ্গে তাদের জোটকে ডাকা হচ্ছে ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ নামে। তাদের যৌথ অভিযানে সম্প্রতি বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে জুন্টা। ২০২১ সালে মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর সেখানে সরকার গঠন করে জুন্টা। গত আড়াই বছর ধরে তারাই চালাচ্ছে দেশের প্রশাসন। সেই থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে বার বার বিদ্রোহ হয়েছে সেদেশে। গত কয়েক মাস ধরে এই বিদ্রোহের আগুনে জ্বলছে পড়শি দেশটি।
বলে রাখা ভালো, গত বছরের ২৭ অক্টোবর থেকে বিদ্রোহী গোষ্ঠী শুরু করেছে ‘অপারেশন ১০২৭’। যার জেরে মায়ানমারের বেশ কয়েকটি প্রদেশে প্রবল বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠেছে। গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে। আর এর প্রভাব পড়েছে মণিপুর, মিজোরামের নিরাপত্তা ব্যবস্থাতেও। এই সংঘর্ষের আঁচ এসে লাগছে বাংলাদেশেও।