সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে জারি হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। আশঙ্কা তৈরি হয়েছে তাঁর গ্রেপ্তারি নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে মুখ খুললেন তিনি। সপাটে জানালেন, এই পরোয়ানা তাঁকে ইজরায়েলকে রক্ষা করা থেকে রুখতে পারবে না।
এক ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহুকে বলতে শোনা গিয়েছে, ''ইসরায়েল-বিরোধী কোনও অশোভন সিদ্ধান্ত আমাদের বাধা দিতে পারবে না। এবং এভাবে আমাকে আমাদের দেশকে রক্ষা করা থেকে রোখা যাবে না।'' তাঁর দাবি, ''আমরা চাপের কাছে নতি স্বীকার করব না।''
পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন আদালত তথা আইসিসিকে পালটা আক্রমণও করেছেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ''হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন আদালত স্থাপিত হয়েছিল মানবিকতাকে রক্ষা করার জন্য। আজ সেটাই মানবতার শত্রু হয়ে উঠেছে।'' তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগকে 'ভিত্তিহীন' বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে নেতানিয়াহু ও সেদেশের প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে। যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ রয়েছে এই দুজনের বিরুদ্ধে। আইসিসি জানিয়েছে, মানবতার বিরোধী অপরাধ যথা খুন, নিপীড়ন এবং অমানবিক নানা অপরাধ করেছেন নেতানিয়াহু ও গ্যালান্ট। পাশাপাশি যুদ্ধের এক ‘অস্ত্র’ হিসাবে অনাহারকে ব্যবহার করার অভিযোগও রয়েছে। গাজায় খাদ্য, জল ও ওষুধের মতো অত্যাবশকীয় বস্তুর সরবরাহ আটকে দিয়ে বিপুল সংকট ও মৃত্যুর পরিস্থিতি তৈরি করার অভিযোগেও বিদ্ধ নেতানিয়াহু-গ্যালান্ট। নিহতদের মধ্যে বহু শিশুও রয়েছে।
নেতানিয়াহুর দেশের অভিযানে গাজায় মৃতের সংখ্যা হু হু করে বেড়ে গিয়েছে। এই এক বছরে কার্যত ভেঙে গিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য পরিষেবাও। হাসপাতালগুলোয় উপচে পড়ছে মৃতদেহ। সর্বত্রই এখন শুধু ধবংসের চিহ্ন আর স্বজনহারা কান্না। দেখা দিয়েছে ওষুধের আকাল। এই সংঘাত থামানো নিয়ে প্রতিনিয়ত আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে মিশর, কাতার, সৌদি আরবের মতো দেশ। কিন্তু লক্ষ্যে অবিচল ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। মঙ্গলবার গাজায় পা রেখে তিনি দাবি করেন, যুদ্ধ একবার শেষ হলে পুরোপুরি হামাসমুক্ত হবে গাজা। এর মধ্যেই জারি হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা।