সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফের ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপে অনুপ্রবেশের চেষ্টায় ৩২ জন বাংলাদেশিকে (Bangladeshi) আটক করল তিউনিশিয়ার (Tunisia) নৌবাহিনী। বাংলাদেশিদের পাশাপাশি আরও ৮১ জন ধরা পড়েছে নৌবাহিনীর হাতে। ধৃতদের মধ্যে ৩৮ জন মিশরের, ১০ জন সুদানের ও একজন মরক্কোর নাগরিক বলে জানা গিয়েছে।
শনিবার ঢাকার (Dhaka) খবরল অনুযায়ী, তিউনিশিয়া উপকূল থেকে আটক হওয়া ব্যক্তিদের বয়স ২০ থেকে ৩৮ বছর। এদের মধ্যে এক যুবতীও রয়েছেন। ধৃত ব্যক্তিরা লিবিয়ার আবু কামাশ গ্রাম থেকে যাত্রা করেন। এই গ্রামটি তিউনিশিয়ার উত্তর-পূর্ব উপকূল থেকে প্রায় ছ’ কিলোমিটার দূরে। জানা গিয়েছে, তাঁরা যে নৌকায় করে ইউরোপের উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন, সেটি সমুদ্রযাত্রার জন্য উপযুক্ত নয়। ফলে যাত্রাপথেই নৌকাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিউনিসিয়ার উপকূল থেকে ইটালির লাম্পেদুসা দ্বীপ ১৩০ কিলোমিটার দূরে। ফলে এই পথ মানব পাচারের জন্য বহুল ব্যবহৃত। লিবিয়া থেকে ইটালির উপকূলে পাড়ি জমানোর পথটি মানব পাচারের জন্য জনপ্রিয়। এই দুই পথেই অনুপ্রবেশকারীদের ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে থাকেন।
[আরও পড়ুন: ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার বাংলা টেলিভিশনের অভিনেত্রীর ঝুলন্ত দেহ, গড়ফায় চাঞ্চল্য]
এর আগে গত এপ্রিল মাসের শেষার্ধ্বে লিবিয়া থেকে ইউরোপে পাড়ি জমানোর সময় ৫৪২ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার তথ্য অনুসারে, ২০২১ সালে ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবিতে প্রায় ২ হাজার অনুপ্রবেশকারীর মৃত্যু হয়েছে বা নিখোঁজ হয়েছেন। ২০২০ সালে এই সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪০১। আটকদের মধ্যে অধিকাংশ বাংলাদেশিই দেশে ফিরতে রাজি হন। পরে তাঁদের দেশে ফেরাতে বাংলাদেশ দূতাবাস লিবিয়ার অভিবাসন অধিদপ্তর এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা-সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পুরো প্রক্রিয়া শেষ করে চলতি মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে আটকরা দেশে ফিরতে পারেন বলে জানিয়েছেন লিবিয়ার বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত।
ত্রিপোলির বন্দি শিবিরে রাখা বাংলাদেশি নাগরিকদের সঙ্গে দূতাবাসের আধিকারিকরা কথা বলে ৪০০ জনের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছেন। এর মধ্যে ২৪৪ জন দেশে ফিরতে রাজি হওয়ায় তাঁদের সমস্ত তথ্য নথিভূক্ত করার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন আইওএমের মাধ্যমে (স্পনসর টিকিট) তাঁদের যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফেরানোর কাজ চলছে। বাংলাদেশের বিদেশ সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলছেন, ”মানবপাচার রোধে সরকার শক্ত অবস্থানে থাকার পরেও অবৈধ পথে ও জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর উপকূল হয়ে ইউরোপ যাত্রার সংখ্যাটি কমছে না।”