অর্ণব আইচ: কখনও তিনি দেবস্মিতা, কখনও বা পায়েল। আবার কারও কাছে তিনি মউ। এভাবে একের পর এক নাম পালটে চাকরি দেওয়ার নামে জালিয়াতি চক্র চালাচ্ছিলেন মহিলা। পুলিশের ধারণা, অন্তত দশটি নাম নিয়ে তিনি চালাচ্ছিলেন এই জালিয়াতি চক্র। এই চক্রের চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে দু’জন মহিলা।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের নাম অরূপ কুণ্ডু, রাজ মল্লিক, মউ রায় ও মৌমিতা সাহা। কীভাবে কাজ করত এই চক্র, তাও জানতে পেরেছে পুলিশ। এই চক্রটি বিভিন্ন খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে দাবি করে যে, বেসরকারি ব্যাংকে (Bank Job) বিভিন্ন পদে চাকরি আছে। এছাড়াও সরকারি কয়েকটি দপ্তরেও চাকরির কথা বলা হয়। মোবাইল নম্বর দেখে যোগাযোগ করলে চাকরিপ্রার্থীদের অফিসে ডেকে পাঠানো হতো। প্রথমেই চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলতেন ‘দেবস্মিতা ম্যাডাম’। আবার কখনও তিনি মউ বা পায়েলও হয়ে যেতেন। কখনও নিতেন অন্য কোনও নামও।
[আরও পড়ুন: ব্যর্থতার মধ্যেই ধাক্কা অস্ট্রেলিয়ার, সিরিজের মাঝপথে দেশে ফিরছেন অধিনায়ক কামিন্স]
‘দেবস্মিতা’ কিংবা ‘মউ’ নামধারী ওই মহিলা চাকরিপ্রার্থীদের আগাম কয়েক হাজার টাকা দিতে বলতেন। ওই চাকরিপ্রার্থী (Applicants) টাকা দেওয়ার পর তাঁকে দেওয়া হতো চাকরির নিয়োগপত্র। এরপর তাঁর কাছ থেকে চাওয়া হতো এক লক্ষ টাকা। দেওয়া হয় জাল নিয়োগপত্র। এভাবে বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা তোলে ওই চক্রটি। চাকরিপ্রার্থীরা ব্যাংকে নিয়োগপত্র নিয়ে গিয়ে দেখালেই জানতে পারে, সেগুলি জাল। কিন্তু মাস দুই পরই অফিস বন্ধ করে দিয়ে উধাও হয়ে যায় তাঁরা।
[আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের গ্রেপ্তার ২ এজেন্ট, এবার সিবিআইয়ের জালে তাপস ও নীলাদ্রি]
এভাবে এক চাকরিপ্রার্থী আগাম ২৬০০ টাকা দেওয়ার পর তাঁকে একটি ব্যাংকের নিয়োগপত্র (Appoinment) দেওয়া হয়। তিনি এক লক্ষ টাকা নিয়ে আসছেন বলে নিয়োগপত্রটি নিয়ে ব্যাংকে যান। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাঁকে জানায়, নিয়োগপত্রটি জাল। জালিয়াত চক্রের শেষ অফিসটি নেওয়া হয়েছিল হেয়ার স্ট্রিট (Hare Street) এলাকায়। তাই ওই যুবক হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তারই ভিত্তিতে পুলিশ ওই অফিসে তল্লাশি চালিয়ে দুই মহিলা-সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতরা কতজনের কাছ থেকে কত টাকা জালিয়াতি করেছে, তা তাদের জেরা করে জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।