অর্ণব দাস, বারাসত: সন্দেশখালির নির্যাতিতারা চাইলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের বন্দোবস্ত করবেন বলে কথা দিয়েছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পূরণ হল প্রতিশ্রুতি। সন্দেশখালির ৫ নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করলেন নরেন্দ্র মোদি(PM Modi)। বারাসতের কাছারি ময়দানের সভা শেষে মঞ্চের পিছনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয় তাঁদের। শেখ শাহজাহান এবং তাঁর ভাই শেখ সিরাজউদ্দিনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন ওই পাঁচজন। এদিকে, সন্দেশখালির আরেক দল মহিলাও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তবে সময়মতো সভাস্থলে পৌঁছতে না পারায় সাক্ষাৎ হয়নি। লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের কাছে মোদির সঙ্গে দেখা করানোর অনুরোধ জানান। তবে প্রধানমন্ত্রী নির্দিষ্ট সময়মতো বেরিয়ে যাওয়ায় দেখা করা হয়নি তাঁদের।
বুধবার মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের পর নির্যাতিতারা আপ্লুত। মোদি তাঁদের প্রত্যেকের নাম, কোথায় বসবাস করেন তা জানতে চান। শেখ শাহজাহান এবং তাঁর ভাই সিরাজউদ্দিন কীভাবে তাঁদের উপর অত্যাচার করতেন, দলীয় কার্যালয়ে ডেকে কীভাবে হেনস্তা করা হত, সেসব কথা বিস্তারিতভাবে শোনেন। রাজ্য পুলিশের উপর আস্থা না থাকায় এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানান মহিলারা। প্রধানমন্ত্রীর পাশে থাকা এক আধিকারিক সেসব অভিযোগ লিখে নেন। লাগাতার যেভাবে মহিলারা পথে নেমে আন্দোলন করেছেন সেই প্রসঙ্গ তুলে মোদি নির্যাতিতাদের বলেন, “আপনারাই তো দুর্গা।” সন্দেশখালির নির্যাতিতাদের পাশে থাকার আশ্বাসও দেন প্রধানমন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা রাজ্যের, শাহজাহানকে নিজেদের হেফাজতে নিতে বাধা নেই সিবিআইয়ের!]
উল্লেখ্য, রেশন দুর্নীতিতে ইডির স্ক্যানারে শেখ শাহজাহান। গত ৫ জানুয়ারি তাঁর বাড়িতে গিয়ে হামলার শিকার হন ইডি আধিকারিকরা। তার পর থেকেই শিরোনামে শেখ শাহজাহান। তৎকালীন তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে দফায় দফায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে বিঘা বিঘা জমি, ভেড়ি লুটের অভিযোগ রয়েছে। তেমনই আবার ধর্ষণের অভিযোগও উঠেছে। স্থানীয় মহিলাদের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। দলীয় কার্যালয়েই করা হত হেনস্তা। তীব্র ক্ষোভ বিক্ষোভের পর ফেব্রুয়ারির শেষে গ্রেপ্তার হন শাহজাহান। কলকাতা হাই কোর্টের এই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। থমথমে সন্দেশখালি পরিদর্শনের পর বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কথা দিয়েছিলেন প্রয়োজনে নির্যাতিতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কথা বলার ব্যবস্থা করতে পারেন। দেখাও হল তাঁদের।