সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আরও এক নজিরবিহীন সফল অস্ত্রোপচার দিল্লি এইমসে (Delhi AIIMS)। পাঁচ বছরের শিশুর মস্তিষ্কের টিউমারে জটিল অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। কিন্তু শিশুটিকে অস্ত্রোপচারের সময়ে অজ্ঞান করা হয়নি। অর্থাৎ, সজ্ঞানে নিজের অস্ত্রোপচারের কথা বুঝতে পেরেছে অক্ষিতা নামের ওই শিশু। অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সোমবার শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।
দিল্লি এইমস কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই শিশুই বিশ্বে সর্বকনিষ্ঠ, যার সজ্ঞানে এই ধরনের মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচার করা হল। এর আগে এত ছোট শিশুর মস্তিষ্কে সজ্ঞানে অস্ত্রোপচারের ঝুঁকি নিতে দেখা যায়নি বিশ্বের আর কোথাও।দিল্লি এইমস সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পদ্ধতিটিকে ‘অ্যাওয়েক ক্র্যানিটোমি’ বলা হয়। পাঁচ বছরের ওই শিশু খিঁচুনির সমস্যায় ভুগছিল। এমআরআই এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা দেখেন, শিশুটির মাথার ভিতরে বাঁ দিকে (লেফ্ট পেরিসিলভিয়ান ইন্ট্রাক্সিয়াল) একটি টিউমার রয়েছে। এর ফলে ভবিষ্যতে তার কথা বলায় সমস্যা হতে পারে। তাই দ্রুত অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। লোকাল অ্যানেস্থেশিয়া করে গত ৪ জানুয়ারি তিন ঘণ্টা ধরে চলে অস্ত্রোপচার।
[আরও পড়ুন: সোম সকালে বিদেশমন্ত্রকে মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত, উদ্বিগ্ন মুখ কি দিচ্ছে চাপ বাড়ার ইঙ্গিত?]
অস্ত্রোপচারের সময়ে শিশুটিকে নানাভাবে ভুলিয়ে রাখা হয়েছিল। সাধারণ কিছু জিনিসপত্র, পশুপাখির ছবি ইত্যাদি দেখানো হচ্ছিল। সেগুলি শিশুটি চিনতে পারছে কি না, ঠিকমতো কথা বলতে পারছে কি না, খেলার ছলে তা-ও দেখে নিচ্ছিলেন চিকিৎসকরা। প্রক্রিয়া চলাকালীন যাতে খিঁচুনি না হয়, সেজন্য মস্তিষ্কের উপরে আইস কোল্ড স্যালাইন ব্যবহার করা হয়েছিল। অস্ত্রোপচারের সময়ে প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ওই শিশুকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি দেখানো হয়েছিল। সহজেই সেই ছবি কার, বলে দিয়েছে শিশুটি।
[আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে বড় জয় বিলকিস বানোর, ধর্ষকদের ফিরতে হবে জেলেই]
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুটিকে জাগিয়ে রেখে অস্ত্রোপচার করা জরুরি ছিল। তবে তাতে ঝুঁকিও ছিল। সেই কারণে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শিশুর অভিভাবকদের সঙ্গে ভালো করে আলোচনা করে নেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তঁাদের ভালোভাবে কাউন্সেলিং করা হয়। “এই পদ্ধতিতে সাধারণ অ্যানেস্থেশিয়া করে অন্যান্য অপারেশনের তুলনায় সার্জিক্যাল এবং অ্যানেস্থেশিয়া টিমের নিখুঁত সামঞ্জস্যের আরও বেশি সহযোগিতা প্রয়োজন,” বলেছেন নিউরোসার্জারির অধ্যাপক ডা. দীপক গুপ্তা। যিনি ডা. মিহির পান্ডিয়া এবং ডা. জ্ঞানেন্দ্র পাল সিংয়ের নেতৃত্বে নিউরোঅ্যানেস্থেশিয়া টিমের সঙ্গে এই অপারেশনটি করেছেন।