সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মণিপুরের সামাল দিতে এবার 'অল আউট অ্যাকশন' মোডে কেন্দ্র। উত্তর-পূর্বের ছোট্ট এই রাজ্যে চলতে থাকা বেলাগাম হিংসা সামাল দিতে আরও ৫০ কোম্পানি সিআরপিএফ জওয়ান পাঠানো হচ্ছে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা সেখানে অভিযান চালাবে নিরাপত্তাবাহিনী। সোমবার এই ইস্যুতে হাইভোল্টেজ বৈঠকে বসেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার পরই প্রকাশ্যে এল এই তথ্য।
উল্লেখ্য, গত ৭ নভেম্বর থেকে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মণিপুর। বিশেষ করে এখানকার জিরিবাম জেলা। এখনও পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে এখানে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গত ১৪ নভেম্বর নতুন করে লাগু হয়েছে আফস্পা। বন্ধ করা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। এখানে ২০ কোম্পানি আধাসেনা আগেই মোতায়েন করেছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবার আরও ৫০ কোম্পানি আধাসেনা অর্থাৎ ৫ হাজার সিআরপিএফ মোতায়েন করা হল এই রাজ্যে। সব মিলিয়ে বর্তমানে মণিপুরে আধাসেনার দাঁড়াল পরিমাণ প্রায় এক লক্ষ।
সূত্রের খবর, কেন্দ্রের তরফে আধাসেনাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অল আউট অভিযানে নামার। যে সব বিদ্রোহীরা এখানে সক্রিয় তাঁদের প্রত্যেককে আটক করার এমনকি প্রয়োজনে নিকেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সশস্ত্র বিদ্রোহীদের কাছে কী কী অস্ত্র রয়েছে, তাদের ঠিকানা কোথায় সে সব তথ্য জানতে গোয়েন্দা বিভাগের থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। মায়ানমার সীমান্তর পাশাপাশি জায়গায় জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালাবে নিরাপত্তাবাহিনী। কড়া হাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আধাসেনাকে।
গত সপ্তাহে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয় মণিপুরে। জিরিবাম জেলায় হামলা চালায় কুকি জঙ্গিরা। সেই ঘটনায় নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে ১০ জঙ্গির মৃত্যু হলেও ৬ গ্রামবাসীকে অপহরণ করে কুকিরা। গত শনিবার তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনার পর থেকে নতুন করে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে মণিপুর। প্রতিবাদে গত দুদিন ধরে বিক্ষোভ চলছিল। রবিবার রাতে এখানকার বাবুপাড়ায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল মেতেইরা। অভিযোগ, জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ গুলি চালালে সেখানে মৃত্যু হয় বছর কুড়ির এক যুবকের। এরই প্রতিবাদে উন্মত্ত জনতা হামলা চালায় বাবুপাড়ায় বিজেপি ও কংগ্রেসের পার্টি অফিসে। ভাঙচুরের পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় দলীয় অফিসে।
শনিবার সে রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী গোবিন্দদাস কন্ঠৌজাম, বিজেপি বিধায়ক পাওনাম ব্রজেন, বিজেপি বিধায়ক ওয়াই রাধেশ্যাম, কংগ্রেস বিধায়ক টিএইচ লোকশ্বরের বাড়িতে আগুন ধরানো হয়। তাঁদের বাড়িতে ঢুকে বিক্ষোভকারীরা প্রথমে জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন। বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ইম্ফল পূর্ব জেলার লুয়াংশাংবামে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের পৈতৃক বাড়িতেও হামলার অভিযোগ ওঠে। হামলা হয় মণিপুরের মন্ত্রী সাপম রঞ্জন, বিজেপি বিধায়ক তথা মুখ্যমন্ত্রীর জামাতা আরকে ইমোর বাড়িতেও।