shono
Advertisement

ভরা বসন্তে ভারী তুষারপাত, সতর্কতা অমান্য করে নাথু-লায় আটকে ৫০০ পর্যটক

ত্রাতা সেই সেনাবাহিনীই।
Posted: 08:46 AM Feb 22, 2024Updated: 04:29 PM Feb 22, 2024

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কতা ছিল পাহাড়ের উঁচু এলাকায় হঠাৎ ভারী তুষারপাত হতে পারে। কয়েক দফায় পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বিপদ এড়াতে মঙ্গলবার থেকে শনিবার পর্যন্ত তুষারপাত দেখার নেশা ছাড়তে হবে। কিন্তু কে শোনে সে কথা! অবশেষে পরিণতি যা হওয়ার সেটাই হয়েছে। বুধবার ভাষা দিবসে পূর্ব সিকিমের নাথু-লায় আচমকা ভারী তুষারপাতে আটকে গেলেন অন্তত ৫০০ পর্যটক। অক্সিজেনের অভাবে বরফে আটকে অসুস্থ হলেন অনেকেই। সেনাবাহিনীর ত্রিশক্তি কর্পসের জওয়ানরা জীবন বিপন্ন করে ‘ছেলেখেলা’য় মত্ত পর্যটকদের উদ্ধার করে চিকিৎসা এবং গ্যাংটকে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। এদিনের ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে, আনন্দ উপভোগের অছিলায় কেন বারবার সেনা জওয়ানদের বিব্রত করা! আবহাওয়া দপ্তরের কর্তারাও এদিনের ঘটনায় রীতিমতো বিরক্ত।

Advertisement

এদিকে যখন সিকিম তুষার চাদরে মুখ ঢেকেছে তখন পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ও ঘুর্ণাবর্তের প্রভাবে ভরা বসন্তে দুর্যোগের ঘনঘটা উত্তরে। বুধবার দিনভর ঘন কুয়াশা ঢেকে ছিল শহর-গ্রাম। ভর দুপুরে অন্ধকার নেমেছে। সকালে সমতলে বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টি হলেও তাপমাত্রার তেমন হেরফের হয়নি। এদিন আবহাওয়া দপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার ঘন্টায় ৩০-৪০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড়ো হাওয়া বইতে পারে। উত্তরের জেলাগুলোতে জারি হয়েছে ‘হলুদ’ সতর্কতা। বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ শিলাবৃষ্টির জেরে সমতলে ফসলের ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়েও বৃষ্টির সম্ভাবনা বেড়েছে। শনিবার পর্যন্ত এই দুর্যোগ চলতে পারে।

[আরও পড়ুন: বাড়ির অন্দরে পড়ে চিকিৎসক দম্পতির গলাকাটা দেহ, লেনদেন নিয়ে অশান্তির জের?]

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের সিকিম কেন্দ্রের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, “পূর্বাভাস মতোই সিকিমের উঁচু এলাকায় ভারী তুষারপাত শুরু হয়েছে। পশ্চিমী ঝঞ্ঝা এবং বিপরীত ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প ঢুকছে। তারই জেরে উত্তরের সমতলের আকাশের মেঘের আনাগোনা বেড়েছে। বৃষ্টির পরিবেশ তৈরি হয়েছে।” সিকিম প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালের পর হঠাৎ পূর্ব সিকিমে তুষারপাত শুরু হয়। অবরুদ্ধ হয় নাথু-লা, ছাঙ্গু রাস্তা। মূহুর্তে অন্তত পনেরো ইঞ্চি পুরু বরফে তলিয়ে যায় রাস্তা। আটকে পড়ে পর্যটক বোঝাই ১৭৫টি গাড়ি। একদিকে প্রবল তুষারপাত। অন্যদিকে হিমশীতল ঝোড়ো হাওয়ায় অক্সিজেনের মাত্রা কমতে অসুস্থ হয়ে পড়েন মহিলা পর্যটকদের অনেকে। খবর মিলতে চিন সীমান্তে মোতায়েন সেনাবাহিনীর ত্রিশক্তি কর্পসের জওয়ানরা তাঁদের উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে চিকিৎসার এবং গরম জল, খাবার সরবরাহ করে। পরে নিরাপদে গ্যাংটকে ফিরে যেতে সাহায্য করে। আবহাওয়া দপ্তরের কর্তারা প্রশ্ন তুলেছেন, বার বার বলা হয়েছে এই মূহুর্তে পাহাড়ে ভ্রমণ বিপজ্জনক। এর পরও কেন হুজুগ?

জানা গিয়েছে, এই দফায় দুর্যোগ সহজে পিছু ছাড়ছে না। কারণ, পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ঘূর্ণাবর্তে পরিণত হয়ে উত্তর পাকিস্তানের উপরে রয়েছে। এছাড়াও নতুন একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা পশ্চিম হিমালয়ের উপরে তৈরি হতে পারে ২৪ ফেব্রুয়ারি। উত্তর বাংলাদেশের উপরেও একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। এর প্রভাবে আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তন ঘটে চলেছে। বর্ষার মতো পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কয়াশার দাপটও অব্যাহত। আবহাওয়া দপ্তরের কর্তারা জানান, হালকা বৃষ্টি হলে দার্জিলিং পাহাড়ের উঁচু এলাকায় তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কতায় ঝড়বৃষ্টির সময় রাস্তায় নয়, ঘরে থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে। কারণ, বজ্রপাতের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও বৃষ্টিতে আলু চাষিদের ক্ষতি হতে পারে।

 

[আরও পড়ুন: আজব কাণ্ড! খাতার বদলে জমা পড়ল প্রশ্ন, উচ্চমাধ্যমিকের উত্তরপত্র নিয়ে বাড়িতে পরীক্ষার্থী]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement