সন্দীপ চক্রবর্তী: নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে টিউশনি করায় রাজ্যের পাঁচটি জেলার ৬১ জন প্রাথমিক শিক্ষককে পড়তে হল তদন্তের মুখে। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলল বিকাশ ভবন (Bikash Bhaban)। স্কুলশিক্ষার ডেপুটি ডিরেক্টর সংশ্লিষ্ট জেলার ইন্সপেক্টরদের অর্থাৎ প্রাথমিক শিক্ষায় ডিআইদের (DI) এই চিঠি পাঠিয়েছেন।
বস্তুত রাজ্য সরকারের তরফ থেকে স্কুলে কর্মরত শিক্ষকদের বারবার টিউশনি (Tusion) বন্ধ করতে আরজি রাখা হয়েছিল। কড়া ব্যবস্থারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এভাবে নাম, সার্কেল ও স্কুলের নাম দিয়ে শিক্ষকদের তালিকা আগে তুলে ধরা হয়নি। আপাতত এই ৬১ জনের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত তুলে ধরতে চাইছে রাজ্য। শিক্ষকদের একাংশ স্বাগত জানালেও এটি যে খড়ের গাদায় ছুঁচ খোঁজা, সেটাও জানাতে ভোলেননি তাঁরা।
[আরও পড়ুন: আমেরিকায় ফের বন্দুকবাজের হামলা, মিউজিক কনসার্টে নিহত নাবালক, গুরুতর জখম পুলিশ]
যে পাঁচ জেলার শিক্ষকদের এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সেগুলি হল উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, বীরভূম, কোচবিহার ও পুরুলিয়া। দ্রুত ডিআইদের থেকে ‘অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট’ অর্থাৎ কী ব্যবস্থা নেওয়া হল, বিস্তারিত জানতে চেয়েছে বিকাশ ভবন। নিয়ম অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তদন্ত হবে। সেই তদন্তে স্থানীয় থানাকেও যুক্ত করা হবে। আর তারপর ওই শিক্ষকদের কাছে জানতে চাওয়া হবে। এবং তাঁদের অবিলম্বে গৃহশিক্ষকতা (Private Tution) ছাড়তে বলা হবে। তারপরও কেউ না ছাড়লে তাঁকে সাসপেন্ড করা হতে পারে। এর জন্য শিক্ষককে মুচলেকাও দিতে হতে পারে।
[আরও পড়ুন: মোবাইল সংস্থার কর্মীদের মাধ্যমেই তোলা হত জাল সিমকার্ড, গ্রেপ্তার জামতাড়া গ্যাংয়ের ৪]
উল্লেখ্য, জুন মাসেরই প্রথম সপ্তাহে স্কুলশিক্ষার কমিশনারকে পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশনের স্টেট প্রোজেক্ট ডিরেক্টর এ ব্যাপারে চিঠি দিয়েছিলেন। সেখানেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তার আগে টিউটর্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার সম্পাদক সোহম ভট্টাচার্য নির্দিষ্ট নথি-সহ চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তাৎপর্যপূর্ণভাবে ৪৭ জনই উত্তর ২৪ পরগনা জেলার। এর মধ্যে দু’জন প্যারাটিচার।
৪৭ জনের মধ্যে বেশিরভাগ বাদুড়িয়া, বসিরহাট, গাইঘাটা, হাসনাবাদ, স্বরূপনগর, দেগঙ্গা, দমদম ও মধ্যমগ্রামের বিভিন্ন চক্রের। চারজন নদিয়া জেলার। দু’জন বীরভূম, তিনজন কোচবিহার ও পাঁচজন পুরুলিয়ার বান্দোয়ান ১ ও ২ চক্রের। রাজ্যের শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারী সমিতির প্রধান উপদেষ্টা মনোজ চক্রবর্তী এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, “বেকারত্ব কমাতে সরকারি বা সরকার পোষিত স্কুলের শিক্ষকদের অবিলম্বে প্রাইভেট টিউশন বন্ধ করা উচিত। এই শিক্ষক বাদে যাঁরা গৃহশিক্ষকতা করেন, তাঁদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন নেই।”