সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেখার বয়স নেই। একথা মুখে বলা যত সহজ, কাজে করা ততটাই কঠিন। অল্প মানুষই পারেন। গোটা বিশ্বের সেই সংখ্যালঘু মানুষের একজন হলেন তেষট্টি বছরের রঞ্জন মণ্ডল। ইতিমধ্যে চাকরি থেকে অবসর নেওয়া রঞ্জন চলতি শিক্ষাবর্ষে স্নাতকোত্তর স্তরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলি-কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভরতি হয়েছেন। আইআইটি খড়্গপুরের (IIT Kharagpur) এই প্রাক্তনীর বেশি বয়সে পড়াশুনোর অনুপ্রেরণা নিজেরই মেয়ে।
ছাত্র বয়স থেকেই মেধাবী রঞ্জন মণ্ডল। ১৯৮৩ সালে খড়্গপুর আইআইটি থেকে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। দু’টি আন্তর্জাতিক সংস্থায় কৃতিত্বের সঙ্গে ২০২০ সাল অবধি চাকরি কর অবসর নেন। সেই মানুষটাই নতুন করে পড়াশুনো করবেন বলে ঠিক করেন সম্প্রতি। যেমন ভাবা তেমন কাজ। চলতি বছরে গ্র্যাজুয়েট অ্যাপটিটিউড টেস্ট ইন ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষা দেন। ‘গেট’ পরীক্ষায় সফলও হন। এরপরই ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলি-কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভরতি হয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ‘ডোন্ট টাচ মাই বডি’ পোস্টার নিয়ে হাজির তৃণমূল, পালটা বিক্ষোভ বিজেপির, ধুন্ধুমার বিধানসভা]
৬৩ বছরের রঞ্জন মণ্ডলের অনুপ্রেরণা নিজের মেয়ে রত্নাক্ষী। মাস্টার্সের পর যিনি বর্তমানে আমেরিকার (America) সিরাকিউজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নে পিএইচ-ডি করছেন। রঞ্জনের কথায় মেয়ে পারলে তিনি পারবেন না কেন! তাছাড়া ঢাকাচাপা ইচ্ছে ছিলই। রঞ্জন জানিয়েছেন, তাঁর অনেক সহপাঠী, বন্ধুবান্ধব শিক্ষা জগতে যায়। তখনই পড়াশোনার ইচ্ছে হত।
কিন্তু সেই ইচ্ছেকে বাস্তবে রূপ দেওয়া বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। সেই চ্যালেঞ্জে নিতে এবার অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছেন ৬৩ বছরের রঞ্জন মণ্ডল। জানিয়ে দিয়েছেন, সন্তানসম অন্য ছাত্রদের সঙ্গে ক্লাস করতে মোটেই অসুবিধা হবে না। আরও জানিয়েছেন, এবারের পড়াশুনো অন্যরকম। পাশ-ফেলের দায় নেই, মা-বাবার বকুনি থেকে বহু দূরে এবারের পঠনপাঠন কেবল মুক্তমনে নিজের জন্য।
[আরও পড়ুন: চাকরিতে বঞ্চনার অভিযোগ, হাই কোর্টে শ্রেষ্ঠ ক্রীড়াবিদের পুরস্কার পাওয়া বিশেষভাবে সক্ষম সাঁতারু]
প্রসঙ্গত, বিদেশের বহু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে তরুণদের পাশে প্রবীণ ছাত্রের দেখা মেলে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও বিখ্যাত বেশি বয়সি পড়ুয়ার দৃষ্টান্ত রয়েছে। নাট্যব্যক্তিত্ব বাদল সরকার ৬৪ বছর বয়সে তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগে স্নাতকোত্তর স্তরে ভরতি হয়েছিলেন। নিয়মিত ক্লাস করতেন। সেই অভিজ্ঞতার কথা বহু লেখায় জানান তিনি।