নয়াদিল্লি: অধিকাংশ কোভিড (Covid-19) পজিটিভ ভারতীয়, যারা সংক্রমণের কবলে পড়ার আগে ভ্যাকসিনের অন্তত একটি ডোজ নিয়েছেন, তাঁরা সকলেই কোভিডের ডেল্টা প্রজাতির দ্বারা সংক্রমিত হয়েছিলেন। এই হার প্রায় ৮৬ শতাংশ। আইসিএমআর-এর (ICMR) একটি নয়া সমীক্ষায় এমন চাঞ্চল্যকর তথ্যই মিলেছে।
প্রসঙ্গত, কোভিড টিকাকরণের পর সংক্রমণের মতো বিষয় নিয়ে আইসিএমআর-এর সমীক্ষাই হল প্রথম। আর সেই সমীক্ষার ফলেই প্রকাশ, দেশে অন্যান্যদের তুলনায় টিকাপ্রাপ্তরাই সবচেয়ে বেশি কোভিডের ডেল্টা প্রজাতির দ্বারা সংক্রমিত হয়েছেন। তবে মৃত্যুর হারের নিরিখে বিচার করলে দেখা গিয়েছে, কোভিডের টিকাপ্রাপকদের মধ্যে মৃত্যুর হার খুবই কম। মোট ৬৭৭ জনের উপর এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। এঁরা প্রত্যেকেই কোভিড পজিটিভ ছিলেন। এঁদের মধ্যে ৭১ জন কোভ্যাক্সিনের ডোজ নিয়েছিলেন, আর বাকি ৬০৪ জন নিয়েছিলেন কোভিশিল্ডের ডোজ। দু’জন নিয়েছিলেন চিনা সিনোফার্ম ভ্যাকসিন। টিকাপ্রাপকদের মধ্যে তিনজনের মৃত্যুর খবর পরে মিলেছিল।
[আরও পড়ুন: ইংরাজি-হিন্দিই নয়, মোদির বারাণসীতে স্টেশনের নাম লেখা সংস্কৃত ও উর্দুতেও]
আইসিএমআর-এর সমীক্ষার ফলে প্রকাশ, সামগ্রিকভাবে টিকাপ্রাপ্ত হওয়ার পরেও কোভিড পজিটিভ সাব্যস্ত হওয়া ব্যক্তিদের সিংহভাগই অর্থাৎ ৮৬.০৯ শতাংশই সংক্রমিত হয়েছিলেন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের (বি.১.৬১৭.২) দ্বারা। এর মধ্যে ৯.৯ শতাংশ ক্ষেত্রে (মোট ৬৭ জনের ক্ষেত্রে) সংক্রমিতদের হাসপাতালে ভরতি হয়ে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়েছিল। আর মৃত্যুর হার ছিল খুবই কম, মাত্র ০.৪ শতাংশ ক্ষেত্রে।
আরটি-পিসিআর টেস্টে পজিটিভ সাব্যস্ত হওয়া ৬৭৭ জন, যাঁরা সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন, তাঁরা এসেছিলেন দেশের মোটামুটি সমস্ত প্রান্ত থেকেই অর্থাৎ উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিম এবং মধ্য ভারতের নানা অংশ থেকে। দেশের ১৭টি রাজ্য তথা কেন্দ্রশাসিত এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এই রাজ্যগুলি হল মহারাষ্ট্র, কেরল, গুজরাট, উত্তরাখণ্ড, কর্নাটক, মণিপুর, অসম, জম্মু-কাশ্মীর, চণ্ডীগড়, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, পাঞ্জাব, পণ্ডিচেরি, নয়াদিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ এবং তামিলনাড়ু। মোট ৪৮২টি নমুনা (৭১ শতাংশ) ছিল উপসর্গযুক্ত আর ২৯ শতাংশ ছিল উপসর্গহীন। প্রধান উপসর্গগুলির মধ্যে ছিল জ্বর (৬৯ শতাংশ), গায়ে ব্যথা-মাথা ব্যথা-বমিভাব (৫৬ শতাংশ), কাশি (৪৫ শতাংশ), গলা ব্যথা (৩৭ শতাংশ), স্বাদ ও গন্ধের অনুভূতি চলে যাওয়া (২২ শতাংশ), ডায়েরিয়া (৬ শতাংশ), শ্বাসকষ্ট (৬ শতাংশ) এবং চোখের সমস্যা, লালভাব (১ শতাংশের ক্ষেত্রে) প্রভৃতি।