শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: চারদিন ধরে মায়ের দেহ আগলে রাখলেন যুবক। রান্না-খাওয়া সেরে নির্দ্বিধায় দেহের পাশেই ঘুমোন তিনি। দুর্গন্ধ বেরনোয় রবিবাহ হর সন্দেয় প্রতিবেশীদের। এরপরই খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার করে দেহটি। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে চোপড়ায়।
উত্তর দিনাজপুরের (North Dinajpur) চোপড়ার কালাগজ সংলগ্ন সুভাষনগর এলাকার বাসিন্দা ওই বৃদ্ধার নাম কুসুম চক্রবর্তী। তাঁর একমাত্র ছেলে রামকৃষ্ণ পেশায় এনজিও কর্মী ছিলেন। বছর খানেক আগে অসুস্থতার জন্য চাকরি হারান। তারপর থেকেই মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। কুসুমদেবী হাটে বাজারে ভিক্ষা করে সংসার চালাতেন। প্রতিবেশীরা জানান, ওই মা-ছেলে সেভাবে কারও সঙ্গে মিশতেন না। সেই কারণে কয়েকদিন ধরে বৃদ্ধাকে দেখতে না পেলেও তাঁরা বিষয়টাকে গুরুত্ব দেননি। রবিবার দুর্গন্ধ পাওয়াতেই সন্দেহ হয় তাঁদের। জানা গিয়েছে, প্রতিবেশী এক ব্যক্তি রামকৃষ্ণকে তাঁর মায়ের কথা জিজ্ঞেস করতেই তিনি জানান কুসুমদেবীর মৃত্যুর কথা। এরপরই খবর দেওয়া হয় পুলিশে। তাঁরাই ঘটনাস্থল থেকে প্লাস্টিক ঢাকা দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার করে বৃদ্ধার দেহ।
[আরও পড়ুন:ফের দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে শীর্ষে কলকাতা, ঊর্ধ্বমুখী রাজ্যের কোভিড গ্রাফও]
কেন মায়ের মৃত্যুর খবর কাউকে জানাননি রামকৃষ্ণ? ওই যুবকের দাবি, চারদিন আগে মা মারা যাওয়ার পরই পাড়ার লোকজনদের ডাকাডাকি করেছিলেন তিনি। কিন্তু কেউ যাননি। তাই মায়ের দেহ পাশে নিয়েই মাটির পাতিলে চাল ভিজিয়ে খাচ্ছিলেন তিনি। প্রতিবেশীরা বলেন, “ছেলেটার মানসিক রোগ আছে। লোকজন দেখলেই ঝগড়া করে।” কিন্তু কীভাবে মৃত্যু হল কুসুমদেবীর? ইসলামপুর পুলিশ সুপার সচিন মক্কার বলেন, “ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ বলা সম্ভব নয়। তবে মৃত্যুর তদন্তে ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”