সুব্রত বিশ্বাস: বর্ধমান-ব্যান্ডেল লোকাল লাইনচ্যুতির কারণ খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু করেছে রেল। কমিটিতে সিনিয়র অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ গ্রেডের আধিকারিকদের রাখা হয়েছে।
সিগন্যাল অ্যান্ড ট্রাফিক, ইলেকট্রিক্যাল ও ট্রাফিক বিভাগের কর্তাদের নিয়ে গঠিত কমিটি ইতিমধ্যে দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে। ট্রেনটির চালক ব্যান্ডেলের বিকে বর্মা দাবি করেছেন, মালগাড়ির সিগন্যালকে তিনি নিজের সিগন্যাল মনে করেছিলেন। ফলে সিগন্যাল সিস্টেমটি ভাল করে দেখছে কমিটি। পূর্ব রেলের তরফে একেবারে লিখিতভাবে দাবি করা হয়েছে, ‘সিগন্যাল পাসিং অ্যাট ডেঞ্জার’-এর মতো অপরাধ ঘটিয়েছে চালক। ফলে চাকরি থেকে পুরোপুরি বরখাস্ত আইনত অনিবার্য। চালকের পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত লোকো ইন্সপেক্টরকেও (এলআই) জিজ্ঞাসাবাদ করবে কমিটি। এলআইয়ের আওতায় বেশ কয়েকজন চালক থাকে। এলআইয়ের দায়িত্ব চালকের হাঁড়ির খবর সংগ্রহে রাখা। চালক মদ খান কি না, পারিবারিক সমস্যা, সন্তানদের পড়াশোনো, কোনও রোগ রয়েছে কি না, ওষুধ খান কি না। এর উত্তর জানতে তাঁকেও ডাকবে কমিটি বলে জানা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘ডাকাতদেরও সামনে আনতে হবে’, প্রাথমিকে ৩৬ হাজার চাকরি বাতিল নিয়ে দাবি দিলীপের]
দুর্ঘটনা যে সেদিন ভয়াবহ পর্যায়ে যেত, তা নিশ্চিত বলে মনে করছে আধিকারিকদের একাংশ। তবে ব্রেক আধুনিক আইসিএফ ব্যবস্থার থাকায় ভয়াবহতা এড়ানো সম্ভব হয়েছে। গত ডিসেম্বরে শিয়ালদহের কাছে এমনই দুর্ঘটনায় শান্টিং মোটরম্যান একে প্রভাকরকে বরখাস্ত করেছিল রেল। এধরনের ভুলে বরখাস্ত আইনসম্মত। বরখাস্তের পর ফের চালক নানা কারণ দেখিয়ে আর ভুল না করার দাবি জানিয়ে চাকরি ফিরে পাওয়ার আবেদন করেন। এরপর চালককে অন্য বিভাগে চাকরি দেওয়া হয়। এ নজিরও রেলের ক্ষেত্রে এখন স্বাভাবিক বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, সিগন্যাল না মানায় পাশের লাইনে থাকা তেলবাহী মালগাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে বর্ধমান-ব্যান্ডেল লোকালের। যার জেরে লাইন ছেড়ে মাটিতে নেমে যায় লোকাল ট্রেনের প্রথম বগিটি। বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত বলে আশঙ্কা করছে রেল। তবে লোকালের গতি কম থাকায় সেই বিপদ এড়ানো গিয়েছে।