অভিরূপ দাস: রোগী নিজে জানতেন না। চিকিৎসার বিল দেখে জানতে পারলেন শরীরে বাসা বেঁধেছে অন্য অসুখ।
করোনা (Coronavirus) নিয়ে ডিসান হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন সল্টলেকের প্রৌঢ় বসন্তকুমার দামানি। হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়ার দিন বিল দেখেই মেজাজ সপ্তমে তাঁর। ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর ডায়াবেটিস চিকিৎসার জন্য বিলে ধরা হয়েছে মোটা টাকা। বসন্তকুমারের কথায়, “কস্মিনকালেও আমার ডায়াবেটিস ছিল না। অযথা বিল বাড়িয়েছে হাসপাতাল।” অভিযোগ জানান স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনে।
সত্যি জানতে করা হয় ডায়াবেটিস টেস্টও। সেখানে দেখা গেল মিথ্যে নয়, টাইপ টু ডায়াবেটিস (Diabetes) বাসা বেঁধেছে বসন্তকুমারের শরীরে! কিন্তু কি করে? সল্টলেকের বাসিন্দার কথায়, “আমার তো ডায়াবেটিস ছিলই না।” সত্যি জানতে আলোচনয়া বসেন চিকিৎসকরা। ডায়াবেটিস নেই এমন লোকেদের ক্ষেত্রে রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক সীমা খাবারের আগে ৩.৫ থেকে ৫.৫ এমএমওএল/আই এবং খাবার গ্রহণের দু’ঘণ্টা পরে ৮ এমএমওএল/আই। স্টেরয়েডের ব্যবহারে রক্তের এই গ্লুকোজের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। তার ফলেই সুস্থ মানুষের দেহেও দেখা দেয় ডায়াবেটিস। স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের কাছে ডা. শুভঙ্কর চৌধুরি জানিয়েছেন, কোভিডে সাইটোকাইন স্টর্ম ঠেকাতে স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়। এই স্টেরয়েড থেকে টাইপ টু ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা প্রবল।
[আরও পড়ুন: দুর্ঘটনায় হাড় ভাঙা রোগীকে স্রেফ পেন কিলার! যুবকের মৃত্যুতে স্বাস্থ্য কমিশনের শাস্তির মুখে হাসপাতাল]
শুধু স্টেরয়েড নয়, অ্যালার্জি প্রতিরোধকারী অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি কোনও ওষুধ টানা এক সপ্তাহ খেলেই ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা বেশ বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সে কারণে এই ধরনের স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ নিলে অবশ্যই শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ কত তা জেনে নেওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। শুধু স্টেরয়েড নয়, দুশ্চিন্তা থেকেও টাইপ টু ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হয়তো ওই ব্যক্তির শরীরে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা ছিলই। করোনা আক্রান্ত হয়ে দুশ্চিন্তা সেই ডায়াবেটিসকেই বাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু ডায়াবেটিস নয়। স্টেরয়েড থেকে উচ্চ রক্তচাপ, আলসার, হাড় ক্ষয় হওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল।