সম্যক খান, মেদিনীপুর: নাবালিকার প্রেমে আপত্তি ছিল পরিবারের। বিশেষত মা মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক মানকে পারেননি। পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। পথের কাঁটাকে পৃথিবী থেকে সরাতে প্রেমিকের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে মাকে খুন করল সতেরো বছরের ওই নাবালিকা। মেয়ের মোবাইলে থাকা প্রেমিকের সঙ্গে সন্দেহজনক চ্যাট দেখে ঘটনা জানাজানি হয়। মৃতার মেয়ে এবং নাবালিকার প্রেমিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পয়লা বৈশাখের দিন সোনা দোকানে হালখাতার আয়োজন করা হয়। দোকানে গ্রাহকদের ভিড় সামলানো ও তাদের আপ্যায়নে পরিবারের সকলেই ব্যস্ত ছিলেন। সেই সময় মাকে ঠাণ্ডা পানীয়র সঙ্গে বারবার ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয় নাবালিকা। ৩০টি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। অনিতা অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাড়ির সকলেই ভেবেছিলেন খাওয়াদাওয়ার অনিয়মেই অসুস্থতা। গ্যাস, অম্বলের ওষুধও খাওয়ানো হয়। ওই সন্ধেয় মৃত্যু হয় তাঁর। স্থানীয় এক চিকিৎসকও তাঁদের জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে অনিতার। স্বাভাবিক ঘটনা ধরে নিয়ে পরদিন মরদেহটিকে দাহ করে দেন পরিবারের লোকজন।
[আরও পড়ুন: ‘নামমাত্র দামে রাজ্যে মদ বিক্রি, তাই এত ধর্ষণ’, বেফাঁস মন্তব্যে বিতর্কের মুখে শুভেন্দু]
সব কিছুই স্বাভাবিক চলছিল। ইতিমধ্যেই গত বৃহস্পতিবার দুপুরে হেডফোন দিয়ে বসেছিল ওই নাবালিকা। বারবার তাকে খাবারের জন্য ডাকা হয়। তবে সে আসছিল না। অনেকবার ডাকাডাকিতেও না আসায় মেয়েরই এক কাকু রেগে তার ফোনটি কেড়ে নেন। আর তাতেই মেয়ের সব কুকীর্তি ফাঁস। আদালত সূত্রের খবর, ওই হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট অনুযায়ী প্রেমিকের পরামর্শেই ওই নাবালিকা তার মাকে ঘুমের ওষুধ মেশানো ঠাণ্ডা পানীয় খাইয়ে দেয়। সে কথা প্রেমিককে জানাতেও ভোলেনি নাবালিকা। পরিবারের লোকজন মোবাইলে ওইসব লেখা দেখতে পেয়েই দোকানে তার বাবাকে খবর দেয়। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় বাবা অংশুজিৎবাবুর দায়ের করা এফআইআরের ভিত্তিতে নাবালিকা, প্রেমিক এবং তার বাবা ও মাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শুক্রবার নাবালিকাকে জুভেনাইল আদালতে তোলা হয়। তাকে সরকারি হোমে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে জুভেনাইল আদালত। অপরদিকে মেদিনীপুরের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে বাকিদের তোলা হয়। ম্যাজিষ্ট্রেট প্রেমিককে তিনদিনের পুলিশ হেফাজত এবং বাকিদের ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।