দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: বাড়িতে অভুক্ত পরিজন। করোনা কালে অন্য কোনও কাজ মেলেনি। বাধ্য হয়ে কাঁকড়া সংগ্রহ করেই দিন গুজরানের চেষ্টা করেছিলেন মৎস্যজীবী। তবে পেটের দায়ে জঙ্গলে যাওয়াই যেন কাল হল। পরিবারের খাবারের জোগাড় করতে গিয়ে বাঘের হামলার শিকার এক মৎস্যজীবী (Fisherman)। এই ঘটনায় সুন্দরবন কোস্টাল থানার মোল্লাখালিতে নেমেছে শোকের ছায়া।
রবিবার সকালে মোল্লাখালির কালীদাসপুরের বাসিন্দা আনন্দ ধর কাঁকড়া ধরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছেলে এবং এক প্রতিবেশী। নদীতে কাঁকড়া ধরছিলেন তিনজনেই। ঘাপটি মেরে যে বিপদ ওঁত পেতে বসে রয়েছে তা আগে টের পাননি আনন্দবাবুরা। আচমকাই ওই মৎস্যজীবীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘ। চোখের সামনে বাবার উপর বাঘের হামলা দেখে হতচকিত হয়ে যান। কী করবেন বুঝে ওঠার আগেই বাঘ (Royal Bengal Tiger) আনন্দকে টেনে নিয়ে যেতে থাকে। কোনওক্রমে বাঘের মুখ বাবাকে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে গ্রামে ফেরেন তাঁর সঙ্গীরা। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনায় গ্রামে নেমেছে শোকের ছায়া।
[আরও পড়ুন: করোনা পরিস্থিতি উপেক্ষা করেই ২০ হাজার লোক নিয়ে বিজয় উৎসবের ডাক মদন মিত্রর!]
গত সোমবার গোসাবার সাতজেলিয়া চরঘেরি এলাকা থেকে ঝিলার জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে প্রাণ হারান এক মহিলা। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্বামী ও আরেক সঙ্গী। কাঁকড়া খুঁজতে খুঁজতে চলে যান খালের ভিতরের দিকে। তখনই বাঘের আক্রমণের মুখে পড়েন তিনি। কোনওক্রমে আড়ালে গিয়ে প্রাণে রক্ষা পান ভগবতীর স্বামী ও ওই সঙ্গী। ততক্ষণে ভগবতীর শরীরে থাবা বসিয়েছে সুন্দরবনের বাঘ। তাঁর দেহটিকে বাঘের মুখ থেকে ছাড়িয়ে বাঘের নাগালের বাইরে নিয়ে যান বাকি দু’জন। বাঘ সরাসরি মহিলার ঘাড়ে কামড় বসানোয় সেখানেই প্রাণহানি হয় তাঁর। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের পেটের দায়ে প্রাণ গেল আরেক মৎস্যজীবীর। এই নিয়ে ছ’দিনে প্রাণ গেল দু’জন মৎস্যজীবীর।