দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: আয়ের জন্য জঙ্গলে যাওয়াই কাল। বাঘের হামলায় প্রাণ গেল ফের এক মৎস্যজীবীর। নিহত বছর ছত্রিশের মৎস্যজীবী গোষ্ঠ নাইয়া। বাঘের তাঁর অর্ধেক দেহ খেয়ে নেওয়ার পরই উদ্ধার করা হয়। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি থানার চিতুরি জঙ্গলে।
স্থানীয় ও বনদপ্তর সূত্রে খবর, শনিবার সকালে তিনজন মৎস্যজীবীর একটি দল জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে যায়।জঙ্গলে নেমে কাঁকড়া খোঁজার সময় হঠাৎই তাঁদের উপর বাঘ আক্রমণ করে। বাঘের আক্রমণে নিহত হন গোষ্ঠ। এরপর সঙ্গীরা গোষ্ঠকে জঙ্গলে ফেলে চলে আসেন গ্রামে। তাঁরা কথাবার্তা শোনেন গোষ্ঠের প্রতিবেশীরা। এরপরই দৌড়ে জঙ্গলে যান সকলে। প্রতিবেশীরা গিয়ে গোষ্ঠকে বাঘের আক্রমণ থেকে উদ্ধার করে। ততক্ষণে বাঘ অর্ধেক দেহ খেয়ে ফেলে। দেহটি বনদপ্তর ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। মৎস্যজীবীদের কাছে মাছ ধরার কোনও বৈধ অনুমতি পত্র ছিল না বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: পুজোয় দেওয়া যাবে না ফুল, মিলবে না চরণামৃত, একাধিক নিয়ম মেনে খুলল দক্ষিণেশ্বরের মন্দির]
নিহত মৎস্যজীবীর কুলতলি থানার দেবীপুর এলাকার বাসিন্দা। পরিবারে বাবা, মা, স্ত্রী এবং তিনটি সন্তান আছে তাঁর। নুন আনতে পান্তা ফোরানোর সংসার তাঁর।সুন্দরবনের জঙ্গলে মাছ, কাঁকড়া ধরে কোনমতে জীবিকা নির্বাহ করতেন গোষ্ঠ। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্যের মৃত্যুর পর সংসার কীভাবে চলবে সেই চিন্তাই যেন গ্রাস করেছে তাঁদের। গোটা এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া।
এর আগে সুন্দরবনের জঙ্গলে মাছ কাঁকড়া ধরতে গিয়ে এই নিয়ে পাঁচজন মৎস্যজীবী নিহত হলেন বাঘের আক্রমণে। এর আগে সাতজেলিয়া, কুমিরমারি এবং ঝড়খালির মৎস্যজীবীরা সুন্দরবনের জঙ্গলে মাছ, কাঁকড়া ও মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে বাঘের হামলার শিকার হন। লকডাউন ও আমফান পরবর্তী পরিস্থিতিতে সুন্দরবনের জঙ্গলের উপর মানুষের নির্ভরতা বাড়ছে। আর যত নির্ভরতা বাড়ছে তত বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হচ্ছে মৎস্যজীবীর।
[আরও পড়ুন: যেন তাসের ঘর! দাসপুরে সাতসকালে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল ৪ তলা বাড়ি]
The post পেট চালাতে কাঁকড়া ধরতে যাওয়াই কাল, বাঘের হামলায় কুলতলিতে প্রাণ গেল এক মৎস্যজীবীর appeared first on Sangbad Pratidin.