shono
Advertisement

পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়েছে স্ত্রী! স্রেফ সন্দেহের বশে তরুণীর উপর অ্যাসিড হামলা স্বামীর

বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে ওই দম্পতির।
Posted: 08:42 PM Dec 21, 2021Updated: 08:42 PM Dec 21, 2021

বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: ফের অ্যাসিড হামলা নদিয়ায় (Nadia)। এবার আদালত চত্বর থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে জনসমক্ষে স্ত্রীর মুখ ও শরীরে অ্যাসিড ছুঁড়ল স্বামী। বধূকে বাঁচাতে গিয়ে জখম তাঁর মা ও কাকা। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার রানাঘাটে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের নাম সফিউদ্দিন মণ্ডল। ধানতলা থানার শিমুলতলার বাসিন্দা ওই যুবকের সঙ্গে ৬ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল তাহেরপুর থানার টাকশাল এলাকার বাসিন্দা এক তরুণীর। তাঁদের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে কোনও কাজকর্ম করত না ওই যুবক। স্ত্রীর উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালাত সে। পাশাপাশি স্ত্রীকে সন্দেহ করত সফিউদ্দিন। তার দাবি ছিল, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছে স্ত্রী। তা নিয়েই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত। মাস তিনেক আগে সেই অশান্তির জেরে সফিউদ্দিন মণ্ডলকে ছেড়ে তার স্ত্রী ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে যান। যদিও তাতেও অশান্তি মেটেনি। এরপর সফিউদ্দিন তার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে ছেলেকে নিয়ে আসেন নিজের বাড়িতে।তারই মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেন সফিউদ্দিনের স্ত্রী।

[আরও পড়ুন: জামাইয়ের সঙ্গে পালালেন শাশুড়ি! বিচার চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ মেয়ে]

মঙ্গলবার ওই মামলায় রানাঘাট মহকুমা আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল স্বামী-স্ত্রীর। মাকে নিয়ে সফিউদ্দিনের স্ত্রী রানাঘাট মহকুমা আদালতে হাজিরও হয়েছিলেন। টোটো নিয়ে সেখানে যান অভিযুক্ত যুবক। আদালত চত্বরে স্ত্রীকে দেখামাত্রই তার হাত ধরে তাকে টানতে টানতে টোটোতে তুলে নিয়ে যায় সফিউদ্দিন। বিষয়টি নজরে পড়তেই সফিউদ্দিনের পিছু নেয় ওই তরুণীর কাকা ও মা। অভিযোগ, সফিউদ্দিন মাঝরাস্তায় স্ত্রীকে টোটো থেকে নামিয়ে জনসমক্ষেই তার মুখে ও শরীরে অ্যাসিড ছুঁড়ে দেয়। তরুণীকে বাঁচাতে গিয়ে জখম হন তাঁর মা ও কাকা। এদিকে পালানোর আগেই সফিউদ্দিনকে ঘরে ফেলে স্থানীয়রা। উত্তেজিত জনতার মারে মাথা ফাটে তার। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রানাঘাট থানার পুলিশ। অভিযুক্ত সফিউদ্দিনকে এলাকার লোকজন পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

দগ্ধ তরুণীর কথায়, “বিয়ের পর থেকেই আমার উপরে ভীষণ অত্যাচার শুরু হয়। আমার স্বামী কোনওরকম কাজকর্ম করত না। সংসার চলছিল না। আমার মা-বাবা সংসার চালাতে সাহায্য করেন। আমি ভেবেছিলাম, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব ঠিক হয়ে যাবে। আমার স্বামী আমার নামে বাজে বদনাম করা শুরু করে। অ্যাসিড নিয়ে এসে এর আগেই আমাকে ভয় দেখিয়েছিল। বাধ্য হয়েই প্রাণ বাঁচাতে ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানেও আমাকে শান্তিমত থাকতে দিল না। বাপের বাড়িতে গিয়ে আমার ছেলেকে নিয়ে চলে যায় সফিউদ্দিন। বারবার বলা সত্ত্বেও, আমার ছেলেকে কিছুতেই ফেরত দেয়নি। বরং ছেলেকে আমার সম্পর্কে বাজে কথা শিখিয়েছে। বাধ্য হয়ে আমি আমার স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করি। আজ আদালতে আমাকে হাত ধরে জোর করে টোটোতে দূরে নিয়ে গিয়ে অ্যাসিড ছোঁড়ে।”

[আরও পড়ুন: মাঝ রাস্তায় দাউদাউ করে জ্বলে উঠল চলন্ত বাস! আতঙ্কে ঝাঁপ খালাসি ও চালকের]

ইতিমধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সফিউদ্দিন মণ্ডলের কথায়, “আমার স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। তাই আমিও ওর মুখে অ্যাসিড ছুঁড়ে মেরেছি।” পুলিশের একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, আগে থেকে পরিকল্পনা করেই সফিউদ্দিন পকেটে করে অ্যাসিডের বোতল নিয়ে গিয়েছিল। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃত সফিউদ্দিন মণ্ডলকে মঙ্গলবারই রানাঘাট মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। বিচারক তাকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement