সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'ওরা মেরে ফেলবে। আমার স্বামীকে বাঁচান।' কাতর আর্তি আহতের স্ত্রীর। কিছুক্ষণ আগেই পহেলগাঁওয়ের রিসোর্টে ভয়বহ সেই জঙ্গি হানা। যার সাক্ষী ওই মহিলা। চোখের সামনে তাঁর স্বামীকে গুলি করেছে জঙ্গিরা। সেই বিভীষিকার কথা মনে করে এখনও কেঁপে উঠছেন তিনি।
ওই মহিলা বললেন, দুপুর পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। তারপর সব বদলে গেল। সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিও-তে দেখা যাচ্ছে, ওই মহিলা ক্রমাগত চিৎকার করছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, মহিলা দিশাহারা হয়ে ছুটছিলেন আর সাহায্য চাইছিলেন তাঁর স্বামীকে যেন উদ্ধার করা হয়। বলে চলেছেন, "আমার স্বামীকে বাঁচান। ওরা ওকে মেরে ফেলবে।" ওই হামলায় বেঁচে ফেরা আরও এক মহিলার দুর্দশার ছবি ধরা পড়েছে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায়। তিনি বলছেন, "আমরা ভেলপুরি খাচ্ছিলাম। হঠাৎ জঙ্গিরা এসে বলল, তোমার স্বামী মুসলিম নয়। তারপরই গুলি করে দিল।" বিভীষিকার কথা জানিয়েছেন, আর এক প্রত্যক্ষদর্শীও। তাঁর স্বামীকে নৃশংসভাবে গুলি করে মেরেছে জঙ্গিরা। ওই মহিলা জানিয়েছেন, "আমি জঙ্গিদের বলেছিলাম, আমাকেও মেরে ফেল। ওরা বলল তোমাকে মারব না। মোদিকে গিয়ে বলো কী হচ্ছে এখানে।"
পহেলগাঁওয়ে এভাবেই ধর্মীয় পরিচয় দেখে দেখে হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। স্থানীয় সূত্রের দাবি, জঙ্গিরা এসেছিল পুলিশের পোশাক পরে। সব মিলিয়ে ৪০ রাউন্ড গুলি চলেছে। মূলত আক্রমণ করা হয় অমুসলিমদের। ঘটনায় রীতিমতো তছনছ হয়ে গিয়েছে পেহেলগাঁওয়ের ওই বিখ্যাত রিসর্টটি। এখনও পর্যন্ত মোট পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ১২ জন আহত। হতাহতের সংখ্যাটা অনেকটাই বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
বস্তুত পহেলগাঁওয়ের গোটা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। নজর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী মোদিও। ফোন করে অমিত শাহকে দ্রুত কাশ্মীরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। শাহ ইতিমধ্যেই শ্রীনগর রওনা দিয়েছেন। কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ-ও পুরো ঘটনাত স্তম্ভিত। তিনি বলছেন, "সাম্প্রতিক সময়ে কাশ্মীরে সাধারণ নাগরিক বা পর্যটকদের উপর এত ভয়াবহ হামলা হয়নি। আমাদের পর্যটকদের উপর এই হামলা কাপুরুষের মতো কাজ। এই হামলাকারীরা অপরাধীরা পশু, অমানবিক। নিন্দার কোনও ভাষা নেই।"
