সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এদেশের উন্নয়ন সবার জন্য নয়। নগর ভারত আর গ্রামীণ ভারত দুটো ভিন্ন দেশ! এমন অভিযোগ তোলেন কেউ কেউ। সেই অভিযোগকে সত্যি প্রমাণিত করার ঘটনা এবার কেরলে (Kerala)। খানাখন্দে ভরা রাস্তায় গাড়ি চলতে পারে না। তাই বাড়ি থেকে বহু আগেই দাঁড়িয়ে পড়ল অ্যাম্বুল্যান্স। এদিকে প্রসব বেদনায় ছটফট করছিলেন প্রসূতি আদবাসী তরুণী। ফলে পাক্কা সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা ওই তরুণীকে বাঁশে ঝুলিয়ে নিয়ে গেলেন আত্মীয়রা। এরপর রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হয় নিকটবর্তী হাসপাতালে। এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসামাত্র চরম সমালোচনা শুরু হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের।
ঘটনাটি কেরলের পলক্কড় এলাকার আট্টাপাড়ি তালুকের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্তানসম্ভভা সাঁওতাল রমণীর নাম সুমতি মুরুকান। তিনি আট্টাপাড়ির সাঁওতাল পরগণার বাসিন্দা। সুমতির আত্মীরা গোটা ঘটনার কথা জানান। এক আত্মীয় বলেন, “আগামী সপ্তাহ পরে প্রসবের সময় দিয়েছিলেন চিকিৎসক। ফলে প্রস্তুতি ছিল না আমাদের। তবে ভাঙা রাস্তার কারণে যে বাড়ি অবধি অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছবে না, তা জানতাম।”
[আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি, হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা শুভেন্দুর]
ঘটনার দিন রাতে তরুণীর প্রসব বেদনা শুরু হলে মাথায় হাত পড়ে আত্মীয়দের। যেহেতু তাঁরা জানতেন, বাড়ির পথে শেষ সাড়ে তিন কিলোমিটার গাড়ি আসবে না। তবে দ্রুত কাদুকুমানা সাঁওতাল গ্রামের কোট্টাঠারা ট্রাইবাল স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে খবর দেওয়া হয়। নিয়ম মতো অ্যাম্বুলেন্সও রওনা হয় হাসপাতাল থেকে। এবং সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে দাঁড়িয়ে পড়ে সেটি। উপায়ন্তর না দেখে দুটি বাঁশে কম্বল বেঁধে তাতে প্রসূতি রমণীকে ঝুলিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ওই অ্যাম্বুলেন্স অবধি। বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও দ্বিতীয় উপায় ছিল না পরিবারটির কাছে।
[আরও পড়ুন: খুন থেকে ধর্ষণ! গুজরাটে জয়ী বিধায়কদের ৪০ জনই ‘দাগি’, সংখ্যায় এগিয়ে বিজেপি]
যদিও এযাত্রায় বিপদ হয়নি। সাঁওতাল গ্রামের কোট্টাঠারা ট্রাইবাল স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে পৌঁছান তরুণী। পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। আত্মীয়রা জানিয়েছেন, মা ও সন্তান দু’জনেই ভাল আছে। তবে স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছে সাধারণ মানুষ। কেন সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা এতখানি খারাপ হবে যে অ্যাম্বুলেন্স চলতে পারবে না? প্রশ্ন উঠছে।