সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কংগ্রেসের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনায় বসেও নিট ফল হয়েছিল শূন্য। তারপরই প্রশান্ত কিশোরের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ সম্পর্কে মিলেছিল নয়া ইঙ্গিত। সোমবার সমস্ত জল্পনার ইতি ঘটিয়ে প্রশান্ত কিশোর জানিয়ে দেন, নিজেই রাজনৈতিক দল তৈরি করছেন তিনি। অর্থাৎ এবার বিজেপি, কংগ্রেসের মতো হেভিওয়েটদের সঙ্গে সরাসরি নির্বাচনী লড়াইয়ে নামবেন প্রশান্ত কিশোরও। ভোটকুশলী থেকে সোজা রাজনীতিবিদ পিকে-কে দেখবে দেশবাসী। নিজের দলের নাম দিয়েছেন জন সূরজ।
নির্বাচনী স্ট্যাটেজিস্ট অথবা ভোটকুশলী হিসেবে প্রশান্ত কিশোরের (Prashant Kishor) কেরিয়ার নিঃসন্দেহে ঈর্ষণীয়। ২০১২ সালে গুজরাটে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রথম গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন। ‘ঘর ঘর মোদি’ স্লোগান তুলে দু’বছর পর বিজেপিকে দিল্লির মসনদে বসানোর নেপথ্যে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন এই প্রশান্ত কিশোরই। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। ২০১৫-য় বিহার নির্বাচনে জনতা দলের প্রচারের দায়িত্ব নেন। সেখানেও মেলে সাফল্য। নির্বাচনে জিতে মুখ্যমন্ত্রী হন নীতীশ কুমার। ২০১৭ সালে পাঞ্জাবে কংগ্রেসের হাত মজবুত করতে আসরে নামেন পিকে। ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংকে জয়ী করতে বিরাট অবদান রয়েছে তাঁর।
[আরও পড়ুন: ‘২০৩৬ সাল পর্যন্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা, ভাঙবেন জ্যোতি বসুর রেকর্ড’, ফেসবুক পোস্ট কুণালের]
সে বছর উত্তর প্রদেশের (Uttar Pradesh) নির্বাচনে কংগ্রেসেরও হাত ধরেছিলেন তিনি। যদিও শেষমেশ সেখানে ব্যর্থ হন। এরপর থেকে কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে। ২০১৯-এ ভোটকুশলীর পাখির চোখ হয় দক্ষিণের রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশে। জগনমোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেসকে বেছে নেন তিনি। ফের সফল পিকে। এবার পালা দিল্লি দখলের। ২০২০-তে তাঁর স্ট্র্যাটেজির জেরেই বাজিমাত করেন অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি। ২০২১-এ বাংলায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাফল্যের মুকুটে নয়া পালক যোগ করার কাজটিও করেন পটু হাতে। তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা। সেই বিরাট জয়ের অনেকখানি কৃতিত্ব যে প্রশান্তের পাওনা, তা কার্যত ওপেন সিক্রেট। সম্প্রতি প্রশান্ত হাত মিলিয়েছেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাওয়ের সঙ্গে। তারই মধ্যে ২০২৪ লোকসভাকে সামনে রেখে তাঁকে পাশে পেতে চাইছিল কংগ্রেস। কিন্তু দেশের প্রাচীনতম দলের সঙ্গে বনিবনা হয়নি শেষমেশ। এবার সরাসরি রাজনীতির আঙিনায় পিকে।
তবে প্রত্যক্ষ রাজনীতি করার ইচ্ছে আগেও প্রকাশ করেছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে নীতীশ কুমারের হাত ধরে জনতা দলে যোগও দিয়েছিলেন। হয়েছিলেন দলের সহসভাপতি। যদিও সে পদে বেশিদিন স্থায়ী হননি তিনি। বছর দুয়েক পরই ‘দলবিরোধী’ কাজের অভিযোগে জনতা দল থেকে বহিষ্কৃত হন পিকে। তবে এবার কারও সাহচর্যে নয়, পিকে লড়বেন নিজের মতো করে। ভোটকুশলীর কৌশল বাকি দলগুলির কাছে ভবিষ্যতে কড়া চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় কি না, সেটাই লাখ টাকার সওয়াল।