দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: কিশোরী মনে বসন্তের ছোঁয়া। মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হতেই মন দেওয়া নেওয়া। এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়ানো। মেয়ের এই কার্যকলাপ একেবারের না-পসন্দ ছিল বাবার। বেশ কয়েকবার কড়া ধমকও দিয়েছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি। তাঁর বকাবকির যে এমন করুণ পরিণতি হতে পারে, তা ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি সোনারপুরের বাসিন্দা জগদীশ মণ্ডল। নিজের ঘরে গলায় ওড়ানার ফাঁস দিয়ে আত্মহ্ত্যা করল সেই কিশোরী। এই ঘটনায় শনিবার সকালে সোনারপুর এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। তবে ওই কিশোরীর আত্মহত্যার পিছনে অন্য কোনওকারণ আছে কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
শনিবার সকালে নিজের ঘর থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী দিশারানী মণ্ডলের(১৫) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, সোনারপুরের আচার্য্য প্রফুল্লনগর অতুলকৃষ্ণ বিদ্যায়তন স্কুল থেকে এ বছরই দিশারানী মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। তার বাবা জগদীশ মণ্ডল জানান, শুক্রবার রাতে ছেলে, মেয়ে, স্ত্রীর সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া সারেন। তারপর মেয়ে পাশের ঘরে টিভি দেখছিল। রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সেই টিভি চলার আওয়াজ পান তাঁরা। তারপর মোবাইলে মেয়ে কারোর সঙ্গে কথা বলছিল বলেও জানান তিনি। শনিবার সকালে জগদীশাবুর দেশের বাড়ি মথুরাপুরে যাওয়ার কথা। তাই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন বলে মনস্থির করেন। স্ত্রীকে বলে মেয়েকে ডেকে দিতে। কিন্তু মায়ের ডাকে সাড়া দেন না দিশারানী। জগদীশবাবুর স্ত্রী দেখেন, ঘরের দরজা ও জানলা বন্ধ। মেয়ের ফোনে ফোন করেন। ফোনও বেজে যায়। এরপর বাইরের জানলার ফাঁক দিয়ে দেখেন মেয়ে ঘরের মধ্যে ওড়নার ফাঁস দিয়ে ঝুলছে। হইচই পড়ে যায় এলাকায়।
[আরও পড়ুন : বঙ্গোপসাগরে তৈরি হচ্ছে নিম্নচাপ, বাংলায় আবার কি ধেয়ে আসবে ঘূর্ণিঝড়?]
কী কারনে দিশারানী আত্মঘাতী হয়েছে, তা সঠিকভাবে কেউ বলতে পারছেন না। তবে দিশার বাবা জানান, “কিছুদিন হল এক যুবকের সঙ্গে মেয়ে মেলামেশা করছিল। মেয়েকে ও ওই যুবককে এভাবে মেলামেশা করতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু মেয়ে কথা মানতে চায় নি। শেষের দিকে হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। বলে ছিলাম, যাকে পছন্দ তার সঙ্গেই মেলামেশা কর।” প্রেমঘটিত কারণেই ছাত্রীর এই করুন পরিণতি না? না, এই আত্মহত্যার পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন : আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রাপ্য অন্যদের পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ, তৃণমূল নেতার বাড়ি ভাঙচুর]
The post প্রেম করায় বকাবকি করতেন বাবা, গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী appeared first on Sangbad Pratidin.