শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: বিয়ের দশ বছর পরেও অশান্তি মেটেনি। প্রায়দিনই লেগেই থাকত দাম্পত্য কলহ। আর সেই অশান্তির জেরে স্ত্রীকে খুন করার অভিযোগ উঠল স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের (Daspur) ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বাবার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ সরব মৃতার মেয়েও।
পশ্চিম রাজনগরের বাসিন্দা গীতার সঙ্গে বছর দশেক আগে বিয়ে হয় পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের তপন সাঁতরার। তাঁদের দু’টি কন্যাসন্তানও রয়েছে। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে তপন ও গীতার অশান্তি হত। শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার লেগেই থাকত। বছরদশেক কেটে গেলেও অশান্তির কোনও নিষ্পত্তি হয়নি। গত ১১ জুনও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। অভিযোগ, ওইদিন স্বামী তপন-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরা তাঁর উপর ব্যাপক অত্যাচার করে। মাকে মারধরের ঘটনা নজরে আসে গীতার বড় মেয়েরও। তড়িঘড়ি মামার বাড়িতে ফোন করে সে। মাকে বাবা মারধর করছে বলে ফোনে জানায়। ছুটে আসেন গীতার বাপের বাড়ির লোকজন। ততক্ষণে যদিও অচৈতন্য হয়ে গিয়েছেন গীতা। প্রতিবেশীদের সাহায্যে গীতার বাপের বাড়ির লোকজন তাঁকে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করেন। ইতিমধ্যেই হাসপাতালে গীতার স্বামী কিংবা শ্বশুরবাড়ির কাউকেই দেখা যায়নি। গত শুক্রবার মৃত্যু হয় গীতার।
[আরও পড়ুন: করোনায় বদলেছে শ্রাদ্ধের রীতিও, দেড় মাস পর পারলৌকিক অনুষ্ঠান!]
দেহ হাসপাতাল থেকে নেন তাঁর বাপের বাড়ির লোকজনেরা। গীতার মরদেহ তাঁর শ্বশুরবাড়ির সামনে নিয়ে যান তাঁরা। দেহ রেখে বিক্ষোভও দেখাতে থাকে বাপের বাড়ির লোকজন। সুবিচার না পেলে কোনওভাবে দেহ সৎকার করতে দেবেন না বলেই অবস্থান স্পষ্ট করেন তাঁরা। পরে যদিও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। বেশ কিছুক্ষণ গীতার বাপের বাড়ির লোকজনের সঙ্গে তদন্তকারীরা কথা বলেন। অবশেষে পুলিশি আশ্বাসে গীতার দেহ সৎকারের অনুমতি দেন বাপের বাড়ির লোকজন। রবিবার সকালে ওই গৃহবধূর দেহ সৎকার করা হয়। এদিকে, এই ঘটনার পর থেকে গীতার স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির অন্যান্যরা পলাতক। এই ঘটনায় মৃতার দেওরকে আটক করেছে পুলিশ।